আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বৃদ্ধ মাকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে একমাত্র সন্তান সমীর বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। এঘটনায় বৃদ্ধা মা অভিযোগ দিলে বাজার কমিটি তার সন্তানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়।
যে মা দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধারন করে সন্তানের জন্ম দিয়ে লালন-পালন করে এবং অনেক কষ্ট করে নিজে না খেয়ে সন্তানকে মানুষ করে, সেই মাকেই তার সন্তান মারধর করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেলে উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের বড়মগড়া গ্রামের মৃত শুকুমার বিশ্বাসের স্ত্রী বৃদ্ধা ধবলি বিশ্বাস (৭০) কে তার একমাত্র সন্তান সমীর বিশ্বাস ও তার স্ত্রী শিবালী বিশ্বাস মারধর করেন। এর আগেও কয়েক দফায় ওই বৃদ্ধাকে মারধর করেছে তার ছেলে।
বৃদ্ধা ধবলি বিশ্বাস জানান, গত ৪০ বছর আগে আমার স্বামী মারা যায়। তার মৃত্যুর পর অভাবের সংসারে একমাত্র সন্তানকে নিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছি। যে সন্তানকে এতো কষ্ট করে মানুষ করলাম বিয়ে করালাম আর সেই একমাত্র সন্তানই আমাকে প্রায় সময়ই মারধর করে। তার অত্যাচার এখন বৃদ্ধ বয়সে আর সয্য করতে পারি না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য অজিত শিকারী জানান, বৃদ্ধা ধবলি বিশ্বাস আমাকে তার সন্তান মারধর করার কথা জানালে আমি তাকে বাকাল ইউপি চেয়ারম্যান বিপুল দাসের কাছে নিয়ে গেলে সে বৃদ্ধাকে থানায় অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেয়। কিন্তু বৃদ্ধা এতো নির্যাতনের শিকার হওয়া সত্বেও নিজের একমাত্র সন্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়নি।
বাকাল ইউপি চেয়ারম্যান বিপুল দাস জানান, বৃদ্ধা ধবলি বিশ্বাসকে তার সন্তান মারধর করলে তাকে থানায় অভিযোগ দিতে বলেছিলাম। কিন্তু সে কোন অভিযোগ দেয়নি।
অভিযুক্ত সন্তান সমীর বিশ্বাস জানান, তার মার সাথে ঝগড়ার সময় ধাক্কা দেয়ায় তার মা পরে যায়। প্রায় সময় তার মাকে মারধর করার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
শনিবার বৃদ্ধা ধবলি বিশ্বাসকে তার সন্তান মারধর করার ঘটনা বড়মগড়া বাজার কমিটির কাছে জানালে বাজার কমিটির সভাপতি সুনির্মল জয়ধর সমীর বিশ্বাসের ভ্যান-রিকসা মেরামত করার দোকান বন্ধ করে দেয়। কোন সন্তান যেন কোন মাকে এমন ভাবে মারধর না করে এমন প্রত্যাশা স্থানীয়দের।
এব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাজহারুল ইসলাম জানান, বৃদ্ধাকে মারধরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।