ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ! > সময়ের বার্তা ডেস্ক : সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির দুষ্টক্ষত ছাপিয়ে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের পরিবর্তে এখন সংগঠনটির প্রশংসনীয় উদ্যোগ সামনে আসছে। বিশেষ করে গত ডিসেম্বর থেকে নানা সংকটে সংগঠনটির ত্বরিত উদ্যোগ ছিল চোখে পড়ার মতো।
গত বছরের ৬ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলন হয়। এরপর ২০ ডিসেম্বর হয় নতুন কমিটি গঠন। কমিটিতে সাদ্দাম হোসেন সভাপতি এবং শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সাধারণত, কমিটি গঠনের পর ছাত্রলীগ নিয়ে সমালোচনা বা নেতিবাচকই খবরই বেশি চোখে পড়ে। একমাত্র এই কমিটি গঠনের পর প্রশংসা পায় সবার। বিভিন্ন মাধ্যমে ‘ভালো নেতৃত্ব’ এসেছে বলে দাবি করা হয়।
নারী শিক্ষার্থীদের জন্য এবং তাদের মেধা বিকাশের সুযোগ দিতে ‘হার ক্রিয়েশন’ শীর্ষক কনটেস্ট বা প্রতিযোগিতা আয়োজনের ঘোষণা দেয় তারা। এর মাধ্যমে পুরুষের পাশাপাশি মেয়েরাও উদ্যোক্তা হয়ে জাতির প্রয়োজনে কাজ করতে পারবে।
৭ মার্চ সন্ধ্যায় গুলিস্তানের ভবন ধসে হতাহতদের জন্য এক হাজার ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে ছাত্রলীগ। শুধু তাই নয়, হতাহতদের খুঁজে পেতে সাহায্য করাসহ সার্বিক বিষয়ে কাজ করে সংগঠনটি। ১০০ কর্মীর সমন্বয়ে গড়ে তোলে উদ্ধার সমন্বয়ক টিম।
দলীয় কর্মীদের গণতন্ত্র, মানবিকতাসহ সার্বিকভাবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে মতবিনিময়সহ একসাথে কাজ করার জন্য সেমিনার এবং চুক্তিবদ্ধ হয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
বর্তমান কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই সংগঠনকে বিতর্কমুক্ত করার উদ্দেশ্যে সারাদেশে যারা অপরাধমূলক এবং গঠনতন্ত্রবহির্ভূত কাজে জড়িত তাদের বহিষ্কারের মাধ্যমে এই বার্তা দিয়েছে যে, সংগঠনে অপরাধীদের কোনো স্থান নেই। যদিও এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ আছে। তবে নেতারা মনে করেন, এটাই এখন শায়েস্তা করার বড় অস্ত্র।
ছাত্রলীগ অন্য ছাত্রসংগঠনের বন্ধুদের সঙ্গে মতবিনিময়ের ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া সারাবাংলার মেধাবী তরুণদের সাথে ‘চা চক্রের’ আয়োজন করেছে, যাতে তাদের সুন্দর সুন্দর আইডিয়া তারা জানতে পারে এবং সার্বিক সহযোগিতা করতে পারে।
সম্প্রতি বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের সময় ব্যবসায়ীদের মালামাল উদ্ধার ও দোকান মালিক-কর্মচারীদের ইফতার করানোর বিষয়টিও বেশ প্রশংসা কুড়ায়।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, রাজনীতিটাকে আমরা ক্যারিয়ার হিসেবে দেখি না। রাজনীতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মীদের কাছে লাভ-লোকসানের কোনো বিষয় নয়। রাজনীতি আমাদের সমষ্টির কাছে একটি আদর্শিক লড়াই। আমরা মনে করি যে সুনির্দিষ্ট একটি দায়িত্বে আসা মানে সংগঠনকে এগিয়ে নেওয়া, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সামনে আমরা যেন সঠিক প্রতিনিধিত্ব করতে পারি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে পারি। নেতাকর্মীদের কাছে আমরা আরও বেশি দায়বদ্ধ থাকতে চাই। সে লক্ষ্যে কাজ করছি।
তিনি বলেন, ছাত্র সমাজকে স্মার্ট বাংলাদেশের উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে ইতিমধ্যে বেশকিছু কর্মসূচি দিয়েছি, ধাপে ধাপে সেগুলোর বাস্তবায়ন করবো। আরও কিছু কর্মসূচি আমাদের আছে, সেগুলো যথাসময়ে ঘোষণা হবে এবং আমরা বাস্তবায়ন করবো।
ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক কয়েকটি পোস্টার
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অত্যন্ত প্রগতিশীল ও ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন। এই সংগঠনের ইমেজ সব সময় আকাশচুম্বি ছিল। এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সারা বিশ্বে এর সুনাম রয়েছে। এ ধারা আমাদের বর্তমান কমিটি বজায় রেখে চলার চেষ্টা করছে। সামনেও আমাদের সুনামের ধারা অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় একান্নবর্তী পরিবার। এত বড় পরিবারে এতসব সদস্য, সেখানে কোথাও কোথাও কিছু না কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে। এটা নিয়ে সামগ্রিকভাবে আমাদের বিচলিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পাশাপাশি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সহিষ্ণুতা, সংগঠনের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা, সাংগঠনিক গতিশীলতা সেটি সচল রাখার জন্য তাদের যে ওয়ার্কশপ দরকার, সে বিষয়ে আমরা কাজ করে চলেছি।
এরপরও একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের সুনাম নষ্ট করার জন্য কোথাও কোনো অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে কি না সেটাও কিন্তু আমরা অত্যন্ত সুনিপুণভাবে খতিয়ে দেখছি। তবে এতটুকু স্পষ্ট করে বলতে পারি, ছাত্রলীগে কোনো অপরাধীর ঠাঁই হবে না।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন। এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে। ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ!