একজন অসাধারণ সমাজসেবক নাহিদা সুলতানা মো: হিমায়েত মোল্লা :: নাহিদা সুলতানা! জন্মগ্রহণ করেছেন ১৯৯১ সালে ফরিদপুর সদর উপজেলায়। তাঁর বেড়ে উঠা ফরিদপুরেই, তবে শিশুকাল কাটিয়েছে গ্রামের বাড়ি চরমধবদিয়া ইউনিয়নে। তিনি যখন ৪র্থ শ্রেণীতে পড়েন। তখন গ্রামের বাড়ি থেকে চলে আসেন শহরে।
১ম শ্রেণী থেকে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত তিনি গ্রামের একটি প্রাইমারি স্কুলে পড়েছেন। ৪র্থ শ্রেণীতে এসে ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং স্কুল জীবন থেকেই মূলত সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাথেই তাঁর যোগাযোগ। তিনি ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ফরিদপুর সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন।
আরো পড়ুন: মাসিকের সময় যে ৬টি কাজ করা উচিত নয়
আরো পড়ুন: এক বৃষ্টিময় প্রভাত – নুর আতিকুন নেছা
আরো পড়ুন: বাংলার ধূমকেতু পত্রিকার বার্তা সম্পাদক পদে যোগদান করলেন মো: রাকিব হাওলাদার
স্কুল-কলেজ জীবনে কখনো বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন। কখনো বিভিন্ন পুরুষ্কার অর্জন করেছেন তিনি। তিনি বলেন, “আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন মঞ্চে বাবার হাত থেকে পুরুষ্কার নেয়া। জেলা পর্যায়ে পাঠ প্রতিযোগিতা এবং উপস্থিত বক্তিতায় যথাক্রমে ১ম এবং ২য় স্থান অর্জন করে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করা”।
তিনি বিশ্ব-সাহিত্য কেন্দ্রের নিয়মিত সদস্য ছিলেন। তিান প্রচুর বই পড়েছেন এবং বই পড়তে তিনি বেশ পছন্দ করেন। এখন সময় পেলে তিনি বই পড়ে। তার জীবনে তিনি প্রচুর বই পুরুষ্কার পেয়েছেন। পুরুষ্কার প্রাপ্ত বইগুলো নিজের বুকসেলফে সাজিয়ে না রেখে উপহার দিয়েছেন তাঁর গ্রামের নিজস্ব লাইব্রেরিতে যেখানে গ্রামের ছেলেমেয়েরা বিনামূল্যে বই পড়তে পারে।
তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত দক্ষিণ বঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ থেকে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিষয়ে বিবিএ, এমবিএ শেষ করেন। এখানে দুটো বিষয় উল্লেখযোগ্য – একটি হচ্ছে তিনি ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিষয়ের ১ম ব্যাচের ছাত্রী এবং ২য় বিষয়টি হচ্ছে – তিনি এমবিএ শেষ করার আগেই এমনকি বিবিএ এর রেজাল্ট বের হওয়ার পূর্বেই নিজের ডিপার্টমেন্টে খণ্ডকালীন প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তিনি রাজেন্দ্র কলেজে খণ্ডকালীন প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তিনি সদরপুর মহিলা কলেজের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন ২০১৭ সালে।
তিনি ২০০৭ সাল থেকে ফরিদপুর আবৃত্তি সংসদে আবৃত্তি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। বাংলাদেশের আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের বিভিন্ন কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের পর্দায় আবৃত্তি এবং উপস্থাপনা করেছেন। উপস্থাপনা বিষয়টিকে তিনি ভীষণভাবে উপভোগ করেন। বর্তমানে তিনি মহিলা অধিদপ্তরের তত্বাবধানে পরিচালিত কিশোর – কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পে আবৃত্তি শিক্ষিক। বাচ্চাদের সাথে কাজ করতে খুব ভালো লাগে তাঁর।
ছাত্র শিক্ষক সম্পর্ক নিয়ে আসলে তেমন কিছু বলার নেই। সবসময়ই শিশুদের সাথে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চান। শিশুদের মতে তিনি রাগই করতে জানেন না। শিশুরা ভালোবেসে তাঁকে হাসির রানী বলে ডাকে।
তার ক্যাম্পাস জীবন কাটিয়েছেন খুবই মজা করে। তাঁরা পাঁচজন বন্ধু ছিলেন, যারা ফাইনাল পরীক্ষা চলাকালীন সময়ও পরীক্ষার মাঝে যদি ১ দিনও বন্ধ থাকত তবুও আমরা নিয়মিত বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যেতেন। কারন, পরীক্ষা শেষ হলে একেকজন একেক জায়গার চলে যাবে একসাথে আর ঘুরাঘুরি করা হবে না।
তিনি বলেন,“আমি স্বপ্ন দেখি – আমার মাধ্যমে কাউকে স্বাবলম্বী করার। নারীদের নিজস্ব একটি পরিচয় তৈরি করে দেবার।”
এই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে কিছু অসহায় নারী কে নিয়ে তিনি শুরু করেছেন ছোট্ট একটি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। অন- লাইন এবং অফ- লাইন দুটো সুবিধাই আছে। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম – “এ্যাভেলিয়া” বর্তমানে সেখানে ১৫ জন কর্মচারী আছে।
৫ বছরের বিবাহিত জীবনে তাঁর একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তাঁর স্বামী শিক্ষা ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। তারঁ বাবা ফরিদপুর জেলা পরিষদের একজন সম্মানিত সদস্য এবং তাঁর মা গৃহিনী। তাঁরা দুই বোন ও এক ভাই।পরিবারের সবাই এমনকি তাঁর দুই বছর বয়সী মেয়েটিও তাঁকে উৎসাহ যোগায় তাঁর প্রতিটি কাজে।
আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।