দক্ষিণ কলকাতার গার্ডেন রিচ এলাকায় নির্মাণাধীন ছয়তলা বাড়ি ভেঙে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯। ওই বাড়ির ধ্বংসস্তূপে আর কেউ আটকা থাকতে পারে—এই সন্দেহে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চালাচ্ছেন ভারতের বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যরা।
এই ঘটনার পর আজ রাজ্যের কংগ্রেস দলের সভাপতি সংসদ সদস্য অধীর চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মেয়র ফিরহাদ হাকিম। অবিলম্বে তাঁকে গ্রেপ্তার করে বেআইনি নির্মাণের জন্য আইনের সামনে দাঁড় করানো হোক। শাস্তি দেওয়া হোক।
অধীর চৌধুরী এ কথাও বলেছেন, এই বেআইনি নির্মাণের সঙ্গে এলাকার সংসদ সদস্য, বিধায়ক, মেয়র, পৌর কাউন্সিলর দায়ী। তাই মেয়র যতই এই দুর্ঘটনার দায় করপোরেশনের কর্মকর্তাদের ওপর চাপান না কেন, তিনি কোনোক্রমেই এই দায় থেকে রেহাই পাবেন না। তাঁকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে কাঠগড়ায় তোলা হোক। কারণ, তাঁদের অনুপ্রেরণায় ব্যাঙের ছাতার মতো কলকাতায় গড়ে উঠেছে এসব বেআইনি বহুতল বাড়িঘর।
যদিও এই ঘটনার পর আজ মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, বেআইনি নির্মাণ আজ কলকাতায় এক সামাজিক ব্যাধি হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই ব্যাধি দূর করা যাচ্ছে না। পরে তিনি এ কথাও বলেন, বাড়ি নির্মাণের দায় কাউন্সিলরের নয়। এটা করপোরেশনের বিল্ডিং বিভাগের দায়িত্ব। তিনি আরও বলেন, এই কলকাতা করপোরেশনের এলাকায় তিনি ৮০০ বেআইনি বাড়ি ভেঙেছেন। আর গার্ডেন রিচে ভেঙেছেন ২৫টি বাড়ি।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম পৌর করপোরেশনের দুই প্রকৌশলীতে কারণ দর্শাও নোটিশ দিয়েছেন।
রাজ্যের বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও আজ দাবি করেছেন, ‘এই বেআইনি বাড়ি নির্মাণের দায় নিয়ে মেয়রের উচিত অবিলম্বে পদত্যাগ করা। আমরাও চাই মেয়র এই দায় নিয়ে পদত্যাগ করুন।’
এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, পুকুর ভরাট করে এই বেআইনি বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। যদিও এই নির্মাণাধীন ছয়তলা বাড়ির প্রেমোটরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ইতিমধ্যে।
এদিকে এই এলাকা পরিদর্শন করে পৌর করপোরেশন জানিয়েছে, আরও ছয়টি বহুতল বাড়ির সন্ধান মিলেছে, যে বাড়িগুলি ঝুঁকে পড়েছে। এসব বাড়ি গায়ে গায়ে লাগানো। সেই সব বেআইনি বাড়ি ভেঙে ফেলার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে আজ এই বেআইনি নির্মাণ বন্ধ ও বাড়ি ভেঙে পড়ে ৯ জনের মৃত্যুকে সামনে এনে কলকাতা হাইকোর্টে বেআইনি বহুতল নির্মাণ বন্ধের দাবি করা হয়। এ বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রধান বিচারপতি এই নিয়ে মামলা করার অনুমতি দিয়েছেন।