গৌরনদী প্রতিনিধি :যৌতুকের দাবিতে বরিশালের গৌরনদী পৌর এলাকার বড়কসবা মহল্লায় রোববার এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
স্থানীয়রা জানান গৌরনদী পৌর এলাকার বড় কসবা গ্রামের শিপন সরদারের কন্যা স্বর্ণা আক্তারের (২০)একই গ্রামের জালাল খানের ছেলে ও টরকী বন্দরের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মাসুম খানের (২৫) সাথে আড়াই বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পরে জামাতা এখ লাখ টাকা যৌতুক আনার জন্য চাপ সৃষ্টি করে।
মেয়ে স্বর্না বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের এনে দিতে অস্বীকার করায় প্রায়ই মাসুম খান স্বর্নাকে নির্যাতন করে। এ নিয়ে একাধিকবার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিস বৈঠক বসে।
নিহত স্বর্নার বাবা শিপন সরদার অভিযোগ করে বলেন, এক লক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য মেয়ের উপর চাপ সৃষ্টি করে জামাতা মাসুম খান। মেয়ে টাকা দিতে অস্বীকার করায় গত দেড় বছর ধরে মেয়েকে প্রায়ই মারধর করে। এ নিয়ে ৭/৮ বার সালিস বৈঠক হয় কিন্তু সালিস হওয়ার কয়েক দিন যাওয়ার পরেই মাসুম পুনরায় টাকার জন্য মেয়ের উপর চাপ দেয়।
সম্প্রতি সময়ে টাকার জন্য মেয়েকে বেদম মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। তখন আমি গ্রাম্য মাতবরের মাধ্যমে মেয়ের পুনরায় স্বামীর বাড়িতে পাঠিয়ে দেই। আমি জামাতা মাসুম খানকে কিছু দিনের মধ্যে তার দাবিকৃত এক লাখ টাকা দেয়ার আশ্বাস দেই এবং মেয়েকে নির্যাতন না করতে অনুরোধ করি।
কিন্তু সেই টাকার জন্য শেষ পর্যন্ত আমার মাকে ও (মাসুম) মেরে ফেললো। শুক্রবার দিবাগত রাতে জামাতা মাসুম খান মেয়ে স্বর্নাকে মারধর করে বিষয়টি মেয়ে আমাকে ফোনে জানান এবং বলেন বাবা ২৪ ঘন্টার মধ্যে টাকা না দিলে ও আমাকে মেরে ফেলবে। শনিবার রাতে টাকা না পেয়ে মারধর করে এবং রোববার সকালে মেয়ে স্বর্নাকে ঘরের আটকে মারধর করে এক পর্যায়ে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
মাসুম খানসহ স্বজনরা স্বর্নাকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। এ সময় স্বামী মাসুম ও তার পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে জরুরী বিভাগে লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। মাসুম ও তার পরিবারের লোকজন পিটিয়ে আমার মাকে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।
অভিযোগের ব্যপারে জানতে মাসুম খানের কাছে ফোন দিলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। মাসুম খানের মা রুনু বেগমের কাছে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ছেলে মাসুমের সাথে পুত্রবধূ স্বর্নার বিরোধ চলছিল। শনিবার রাতে উভয়ের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হলে রোববার সকালে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আফজাল হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, হাসপাতালে লাশ ফেলে যাওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেছে। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। নিহতের পরিবারের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।