জেনে নিন ডায়াবেটিসের সমাধান । আমাদের শরীর যখন পর্যাপ্ত পরিমান ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না অথবা করলেও ওই ইনসুলিন এর বিপরীতে আমাদের দেহকোষ প্রতিরোধ সৃষ্টি হয়। যার ফলশ্রুতিতে রক্তে শর্করা বেড়ে যায় তাকে ডায়াবেটিস বলে।
ডায়াবেটিসের সুনির্দিষ্ট লক্ষণ:
ঘন ঘন প্রসাব হওয়া।
খুব বেশী পিপাসা লাগা।
বেশী ক্ষুধা লাগা।
যথেষ্ট খাওয়া সত্ত্বেও ওজন কমে যাওয়া।
এছাড়াও আরও কিছু লক্ষণ:
ক্ষত শুকাতে দেরী হওয়া।
চোখে কম দেখা।
খোস-পাঁচড়া, ফোঁড়া প্রভূতি চর্মরোগ দেখা দেওয়া অনেক ক্ষেত্রে অন্যান্য কারণে পরীক্ষায় ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। শতকরা ৫০ শতাংশ বয়স্ক রোগীদের এসব লক্ষণ প্রকাশ পায় না। তবে সাধারন স্বাস্থ্য পরীক্ষাতেই ডায়াবেটিস ধরা পড়ে।
ডায়াবেটিস নির্ণয়ের পরীক্ষা:
অভুক্তঅবস্থায় রক্তের শর্করা নির্ণয়।
খাবারের ২ ঘন্টা পর রক্তের শর্করা।
গ্লাইকোসাইল্যাটেড হিমোগ্লোবিনের মান।
আরো পড়ুন: একজন অসাধারণ সমাজসেবক নাহিদা সুলতানা
আরো পড়ুন: নারীদের প্রজনন ক্ষমতা বাড়ানো ১৫ যোগ আসন
ডায়াবেটিস চিকিৎসা:
১. শিক্ষা: ডায়াবেটিস সারা জীবনের রোগ। সঠিক ব্যবস্থা নিলে এই রোগকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। ব্যবস্থাগুলো রোগীকে নিজ দায়িত্বে সম্পূর্ণভাবে মেনে বলতে হবে এবং পরিবারের সদস্যদের সহযোগীতাও প্রয়োজন। ভালোভাবে রোগ সম্পর্কে জ্ঞান থাকলেঃ
ক. রোগী নিজেই নিজের রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখার দক্ষতা অর্জন করবেন।
খ. পরিবর্তিতে জীবন প্রণালী সহজভাবে গ্রহণ করতে পারবেন।
গ. জরুরী অবস্থা মোকাবিলা করতে পারবেন।
২. শৃঙ্খলা:
ক. নিয়মিত ও পরিমানমত সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে।
খ. ডাক্তার পরামর্শ ব্যতীত ডায়াবেটিসের ঔষধ সেবণ করবেন না।
গ. পায়ের বিশেষ যত্ন নিতে হবে।
ঘ. বছরে একবার রোগ পরীক্ষা করাবেন।
ঙ.নিয়মিত রক্তের সুগার পরীক্ষা করবেন রক্তের গ্লুকোজ খাবার পূর্বে ৬ মিলি মোল প্রতি লিটার এর কম থাকলে বুঝবে হবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আছে।
চ. হাই প্রেশার থাকলে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন।
ছ. অনেক সময় রক্তের গ্লুকোজ হঠাৎ করে রক্তে যেতে পারে সে ক্ষেত্রে নিম্নের লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে পারে যেমন: ক্ষুধা লাগা, মাথা ব্যথা বুক ধরফর করা এমনকি অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারে। এই অবস্থায় হাতে কাছে যেকোনো মিষ্টি জাতীয় কিছু খাওয়াতে হবে এবং পরবর্তীতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৩. খাদ্যভ্যাস:
ক. শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এমন খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
খ. শর্করা বহুল খাবার চাল, আটা দিয়ে তৈরি খাবার, মিষ্টি ফল এগুলো হিসাব করে খেতে হবে।
গ. চিনি মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে।
ঘ. আঁশবহুল খাবার বেশী খেতে হবে।
ঙ. ঘি, মাখন, ডালডা, মাংস ইত্যাদি কম খাওয়া এর বদলে উদ্ভিজ্য তেল যেমন: সয়াবিন বা সরিষার তেল খাবার অভ্যাস গড়ে তোলা।
চ. নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খেতে হবে।
৪. ব্যায়াম:
ব্যায়াম করলে শরীর সুস্থ থাকে। ইনসুলিনের কার্যকারিতা ও নিঃসরন বেড়ে যায়। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাটতে হবে এবং মাধ্যমত অন্যান কায়িক পরিশ্রম করতে হবে।
আরো পড়ুন: নারী সমাজ: প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ
আরো পড়ুণ: চুক্তি আইন কাকে বলে?
৫. নির্দিষ্ট ঔষধ:
অনেকসময় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রেণের জন্য মুখে খাবার ঔষধ অথবা ইনসুলিন প্রয়োজন হতে পারে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শমত ব্যবস্থা নিতে হবে। ইনসুলিন ব্যবহারে অনেক রোগী অনীহা থাকে এবং অনেকে মনে করেন ইনসুলিন শেষ পর্যায়েন চিকিৎসা। একবার ইনসুলিন শুরু করলে আর ছাড়া যাবে না ধারণাটি ভুল। বিশেষ কয়েকটি শারীরিক অবস্থায় ডায়াবেটিস খুব বেড়ে গেলে ইনুলিনের বিকল্প নেই। ডায়াবেটিস এর ঔষধের মধ্যে ইনসুলিনই সবচেয়ে নিরাপত্তা এবং কার্যকরী। তাই চিকিৎসক ইনসুলিন নিতে বললে তা অবশ্যই নিতে হবে।