জেলা-উপজেলা পর্যায়ে নদী রক্ষা কমিটিগুলোর বৈঠক করার ওপর জোর দিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে ত্রুটি বিচ্যুতি থাকলে চিহ্নিত করে জানানোরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকদের সমন্বয়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ করার বিষয়েও আলোকপাত হয়।
সোমবার (৪ মার্চ) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে নৌপরিবহন ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অধিবেশন হয়। এতে দুই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা অংশ নেন।
অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা নদী রক্ষা কমিটির বৈঠকের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছি। নদীর রক্ষার জন্য আমাদের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কমিটি আছে। এই কমিটিগুলো গঠন করে বছরে যেন দু-একটি সভা হয়। কারণ এ কমিটিগুলোতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যুক্ত এবং নদীগুলো রক্ষার সঙ্গে কিন্তু আমাদের জলবায়ু-পরিবেশ সবকিছুর সমন্বয় আছে। কাজেই নদী রক্ষার বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প পরিচালকের বাইরেও বিভাগীয় প্রশাসন ও জেলা প্রশাসন যেন দেখভাল করেন। প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে যেন মাঠ পর্যায়ের মতামত নেওয়া হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে জেলা প্রশাসন দেখভাল করবে।
নদী দখল নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী খালিদ বলেন, নদী দখলের ঘটনা তো অতীত। বাংলাদেশকেও তো দখল করে ফেলা হয়েছিল। বাংলাদেশের গতিপথ পাল্টে দেওয়া হয়েছিল। নদীও রক্ষা পায়নি। সে জায়গা থেকে বাংলাদেশকে আমরা সম্ভাবনার জায়গায় এনেছি। নদী দখলও পুনরুদ্ধার করেছি। এ ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের সহযোগিতা ছিল। নদী দখল নিয়ে আমাদের কঠোর অবস্থান এখনো আছে। আমরা সে জায়গা থেকে সরবো না।
তিস্তা বাস্তবায়ন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। ২০২৩ সালের ২ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী রংপুর গিয়ে প্রায় ১০ লাখ মানুষের সামনে বলেছেন, ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে’ তার মানে এটা বাস্তবায়ন হবে।
এসময় পাশে থাকা পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, তিস্তা নিয়ে সমীক্ষা শেষ পর্যায়ে। এটা বাস্তবায়ন হবে। এজন্য আপনাদের অপেক্ষা করতে হবে।
এসময় জেলা প্রশাসকদের সমন্বয়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ করা হবে বলে জানান পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
তিনি বলেন, আজকের সম্মেলনে জেলা প্রশাসকরা ২০টি প্রস্তাবনা দিয়েছেন। তবে প্রস্তাবনা পাঠালেই তা নিয়ে কাজ করা যায় না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ হলো ৫০ কোটি টাকার ওপরে কোনো প্রকল্প এলে তার সমীক্ষা করা লাগে। এরপর আমরা এলাকাবাসীর দাবি ও নদীভাঙনসহ প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্প গ্রহণ করি।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জেলা প্রশাসনকে প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এতে করে অবৈধ নদী দখল রোধ করা যায়। এছাড়া কাজের গতিও বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি প্রকল্প দেখভালের জন্য একটি টিমও তৈরি হয়, যারা আমাদের রিপোর্ট দিয়ে থাকেন। আশা করছি এভাবেই প্রধানমন্ত্রীর ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে লক্ষ্য তা বাস্তবায়িত হবে।