বরিশালে ‘কবর’ থেকে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে হাজির গ্রাহক!> এম.লোকমান হোসাইন ॥ কবর থেকে বরিশালের ব্যাংকে এসে পে-অর্ডার কেটে চলে জান কবরে! আবার কিছুদিন পরে ফিরে এসে নতুন পে-অর্ডার কাটছেন।
বরিশালে ‘কবর’ থেকে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে হাজির গ্রাহক!
এভাবেই ৯টি পে-অর্ডার কাটে বাকেরগঞ্জর বাসিন্দা মৃত জাকির হোসেন! শুধু পে-অর্ডারই নয়, জাকির হোসেনের হিসাব নম্বর থেকে অন্য হিসাব নম্বরে পাঠানো হয়েছে লাখ লাখ টাকা।
এমন অদ্ভুত তথ্য আসে সময়ের বার্তা’র কাছে। প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লি: বরিশাল শাখায় বাকেরগঞ্জের বাসিন্দা মো: জাকির হোসেন নামের একজন ব্যক্তি হিসাব খোলার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে লেনদেনও করছেন।
- আরো পড়ুন:ইসলামী ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং
- আরো পড়ুন:এজেন্ট ব্যাংকিং কি – এজেন্ট ব্যাংকিং সুবিধা অসুবিধা
- আরো পড়ুন:ইন্টারনেট ব্যাংকিং কিভাবে নিরাপদ রাখবেন
জাকির হোসেন ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টম্বর মৃত্যুবরণ করার পরে বিভিন্ন সময়ে ৯টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকার অধিক ইস্যূ করা হয়। যার মাধ্যমে ১১ লাখ ৭৪ হাজার ৫শত টাকা আত্মসাত করছেন একটি চক্র।
যদিও অভিযুক্তরা অস্বীকার করছেন এ অভিযোগ। তাদের দাবী ব্যাংকিং নিয়ম-কানুন মেনেই সব কিছু করা হয়েছে। ব্যাংকিং নিয়ম অনুযায়ী ব্যক্তিগত কারো ব্যাংক হিসাব নম্বরে অর্থ জমা প্রদান করা যেতে পারলেও ব্যক্তিগত কারো হিসাব নম্বার থেকে অর্থ উত্তোলণ বা অন্য কোন হিসাব নম্বরে অনুমতি ছাড়া টাকা পাঠানোর কোন সুযোগ নাই।
তাও আবার মৃতু ব্যক্তির হিসাব নম্বর থেকে। সময়ের বার্তা‘র অনুসন্ধান বলছে, ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জাকির হোসেনের মৃত্যুর প্রায় ২০ দিন পর অক্টোবর মাসের ১০ তারিখ ৮ লাখ ৫৬ হাজার, ১ লাখ তিন হাজার, ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৯ শত ও ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৯শ , ৪ লাখ ২৪ হাজার, ৪ লাখ ৫৮ হাজার, ১ লাখ ৮৩ হাজার ১ শত, ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫ শত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার
মোট ৯ টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে ৩০ লাখ ৪শত টাকা পে-অর্ডার ইস্যূ করা হয়েছে। এছাড়া ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত আরো কয়েক লাখ টাকা লেনদেন করা হয়েছে।
যা ছিলো আইন বহির্ভূত। ওই সময়কার বরিশাল শাখার ম্যানেজার ও বর্তমানের রাজবাড়ি গোয়ালন্দ শাখার ম্যানেজার মো: মাসুম বিল্লাহ, বর্তমানে ঢাকার গুলশান শাখার নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া ও বরিশাল শাখায় যিনি এখনো কর্মরত সহকারী অফিসার অমিতাভ সরকারের যোগসাজে অবৈধ ওপায়ে লেনদেন করা হয়েছে।
এটি গুরুতর অপরাধ: বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক বরিশাল অফিসের নির্বাহী পরিচালক পরিমল চন্দ্র চক্রবর্তী সময়ের বার্তাকে জানান, অপরাধী যে কেউ হোক না কেন, আইন সবার জন্য সমান, বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংক কাউকে ছাড় দেয় না। মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব নম্বর নয় শুধু ব্যক্তিগত কারো ব্যাংক হিসাব নম্বার থেকে অনুমতি ছাড়া পে-অর্ডার ইস্যূ করা বা লেনদেন করা গুরুত্বর অপরাধ।
- আরো পড়ুন:অনলাইন ব্যাংকিং কেন ব্যবহার করবেন
- আরো পড়ুন:ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর পাসওয়ার্ড কত অক্ষরের হবে
- আরো পড়ুন:বাংলাদেশে প্রচলিত এবং ইসলামী ধারার ব্যাংকিং ব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য কি
পে-অর্ডার ইস্যূ করতে হলে সংশ্লিষ্ট হিসাব নম্বরধারীর স্বাক্ষর প্রয়োজন। উক্ত ঘটনার বিষয় তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেন এই কর্মকর্তা। অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে ম্যানেজার মো: মাসুম বিল্লাহ, সময়ের বার্তাকে জানান, ব্যাংকিং নিয়ম মেনেই জাকির হোসেনের হিসাব নম্বর থেকে লেনদেন করা হয়েছে।
এই কর্মকর্তা আরো বলেন, যদি অভিযোগ থাকে সেটা তার অথরেটি বা বাংলাদেশ ব্যাংক আছে তারা বিষয়টি দেখবেন। গোলাম কিবরিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। অমিতাভ সরকারের কাছে জানতে চাইলে এর কোন সদোত্তর দিতে পারেননি।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন। এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।