বরিশাল কারাগারে আসামী দিয়ে চাঁদাবাজী! > এম. লোকমান হোসাঈন ॥ বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে সময়ের বার্তা‘র কর্তৃক এক অনুসন্ধানে বেড়িয়ে এসেছে আসামী দিয়ে চাঁদাবাজীর দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর তথ্য। কেন্দ্রীয় কারাগারে আসামী দিয়ে অন্য আসামীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে অর্থ! সেই অর্থের একটি বড় অংশ যাচ্ছে কারাগারের সুবেদার, জেলার ও জেল সুপারের হাতে। বেশ কিছু তথ্যপ্রমাণ আসে সময়ের বার্তা‘র হাতে। উক্ত তথ্যগুলো যাচাই-বাচাই করে দেখা যায়, আমদানীতে দায়িত্বে থাকা সাজাপ্রাপ্ত আসামী মেইট সেলিম কামপাস নিয়ে, বিভিন্ন আসামীদের ভয়-ভিতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করছেন।
যা সময়ের বার্তা‘র কাছে সংরক্ষিত। প্রাপ্ত একাধিক লিখিত পত্রে আসামীরা উল্লেখ করেছেন, বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের ৯ নং কক্ষের আসামীদের কাছ থেকে জোড়পূর্বক টাকা আদায় করছেন, মেইট সেলিম। সেলিম আসামীদের প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছেন, তোমাদের কাছ থেকে আদায়কৃত অর্থ জেলার, জেল সুপার এবং সুবেদারকে দিতে হয়। বর্তমানে তাদেরকে অনেক টাকা দিতে হচ্ছে। টাকা না দিলে আমি কি আমার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেবো? সেলিম আরো বলেন, এখানে আরো বহু মেইট আছে, আমদানীতে কামপাস করাইতে পারেনা।
বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ০২ | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর | PDF
কামপাস করা হলে ক্ষমতা ও টাকার প্রয়োজন! আমি একমাস পর আবার এসেছি। কারা কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুযায়ী একই দায়িত্বে একজন কয়েদী বছরে একবার সুযোগ পাবার কথা। অথচ সেলিম বছরে একাধিকবার পাচ্ছেন। নানা অনিয়মের অভিযোগে ভোলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছিল সেলিমকে। রহস্যজনক ভাবে কিছুদিন পর ফের বরিশাল কারাগারে আসেন সেলিম।
জেলখানায় অবস্থানরত এবং সদ্য বের হওয়া সাধারণ হাজতী ও কয়েদীদের দাবী সেলিম তাদের কাছ থেকে জোড়পূর্বক টাকা আদায় করছেন। টাকা দিতে না পারলে জেলার ও সুবেদারদের মাধ্যমে নানা ভাবে শারীরিক ও মানুষিক নিযার্তন চালাচ্ছেন সেলিম। সেলিমের নিযার্তন কাছ থেকে বাচার আকুতি জানান, একাধিক হাজতী ও কয়েদীরা। একাধিক হাজতিরা বলেন, এবিষয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেও কোন লাভ হয়নি।
সেলিমের মতো আরো অনেক এ আছেন জেল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক অর্থ হাতিয়ে নেন। যার প্রমান স্বরুপ সেলিম সহ জেলখানার গুরুত্বপূর্ণ যায়গায় কামপাস নিয়ে থাকা কয়েদীদের পিসি কার্ড যাচাই-বাছাই করলেই বেড়িয়ে আসবে অর্থে উসহ। গত ৮ মে ২০২৩ থেকে ১০ মে পযর্ন্ত বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার এ সময়ের বার্তা‘র তিন দিনের এক অনুসন্ধানে দেখা যায়, কিভাবে হাজতিদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে অবৈধ ওপায়ে অর্থ।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, জেলখানাতে প্রথম দিনে আসা হাজতিদের কাছ থেকে নানা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেন মেইট সেলিম। যার প্রমান স্বরুপ দেখাযায়, নাইম হোসেন হাজতী নং-৩৯৫/৪৫, সাজ্জাদ হাজতী নং৭৯৭/৩৭, ফারুক হাজতী নং ৮০০/৩৭, মোরশেদ হাজতী নং ৭৯৪/৩৭, মোখলেছ হাজতী নং ১১৪/৪৬, জসিম হাজতী নং ১১৫/৪৬, রাজ্জাক হাজতী নং ১১৬/৪৬, মিজান হাজতী নং ১২০/৪৬, সোহেল হাজতী নং ১১৯/৪৬,
ছোবাহান হাজতী নং ১১৮/৪৬ । ৯ মে ২০২৩ এ আবুল হাসানাত হাজতী নং ১২৬/৪৬, নান্না হাজতী নং ১২৮/৪৬, উজ্জল হাজতী নং ১২৫/৪৬, তানবির হাজতী নং ৮০২/৩৭, ফিরোজ হাজতী নং ৮০৩/৩৭, সোলাইমান হাজতী নং ৮০৪/৩৭, লিটন হাজতী নং ৩২৫/৪৫, রিয়াজ হাজতী নং ৩২৬/৪৫, শান্ত হাজতী নং ৩২৭/৪৫, লোকমান হাজতী নং ৩২৮/৪৫, আমিনুল হাজতী নং ৩২৯/৪৫, টিপু হাজতী নং ৩৩১/৪৫, মিজানুর হাজতী নং ৩৩০/৪৫। ১০ মে ২০২৩ নজরুল ইসলাম হাজতী নং ৩৪৬/৪৫,
ইয়াসিন হাজতী নং ৩৪৫/৪৫, রফিকুল হাজতী নং ৩৪৮/৪৫, বাপ্পি হাজতী নং ৩৪৭/৪৫, মোজাম্মেল হাজতী নং ৩৪৯/৪৫, তাহের হাজতী নং ৩৫০/৪৫, আমির হোসেন হাজতী নং ৩৫৪/৪৫, জাহিদ হাজতী নং ৩৫৫/৩৭, আজম হাজতী নং ৮০৭/৩৭, বিল্পব হাজতী নং ৩৫৩/৪৫, জামাল হাজতী নং ৩২৫/৪৫ সহ একাধিক হাজতির তালিকা আসে সময়ের বার্তার হাতে। প্রতিজন হাজতীর কাছ থেকে ৫০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা পযর্ন্ত আদায় করে নেন মেইট সেলিম। যা মাস শেষে প্রায় ৬০ হাজার টাকা।
Google Account বানানোর সহজ পদ্ধতি
অথাত বছরে ৭ লাখ টাকারও বেশি চাঁদাবাজী করা হচ্ছে আমদানী থেকে। আমদানী বলতে মূলত জেলখানায় প্রথম দিন কোন আসামী আসলে তাকে সেখানে রাখা হয়। পরের দিন বিভিন্ন রুমে ভাগ করে রাখা হয়। পরের দিন হাজতিদের স্বজনরা পিসি কার্ড এর মাধ্যমে টাকা দিলে পিসি কার্ড থেকে জোড়পূর্বক ভাবে নানা অংকের টাকা নিয়ে নেন মেইট সেলিম। যা বাদ্ধ্যহয়েই দিতে হচ্ছে হাজতীদের।
বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার এর জেলার আবুল বাশার সময়ের বার্তাকে বলেন, কয়েদি সেলিম এর বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন তিনি। কারা-উপমহাপরির্দশক বরিশাল বিভাগ এর মো: জাহাঙ্গীর কবীর মুঠোফোন রিসিভ না করায় এবিষয় তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন। এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।