নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবার জয়ের স্বপ্ন দেখছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সত্যি আবার হোয়াইট হাউজে প্রবেশ করলে শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, ইউরোপসহ প্রায় গোটা বিশ্বের ওপরই মার্কিন পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা নীতির প্রভাব পড়বে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
ব্রিটেনের দক্ষিণপন্থি টেলিভিশন চ্যানেল জিবি নিউজ আন্তর্জাতিক বিষয়ে ট্রাম্পের প্রকৃত অবস্থান জানতে তার সাক্ষাৎকার নিয়েছে। ব্রেক্সিট আন্দোলনের অন্যতম কাণ্ডারি ও ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত নাইজেল ফারাজ ট্রাম্পকে ন্যাটোসহ বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করেছেন।
রিপাব্লিকান দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ফেব্রুয়ারি মাসে সামরিক জোট ন্যাটো সম্পর্কে যে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন, তা নিয়ে ইউরোপে প্রবল প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। ট্রাম্প বলেছিলেন, ন্যাটোর লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রতিরক্ষা খাতে যথেষ্ট ব্যয় না করলে তার নেতৃত্বে মার্কিন প্রশাসন কোনো আক্রান্ত দেশের সুরক্ষায় এগিয়ে আসবে না। এমনকি রাশিয়াকে এমন দেশের ওপর হামলা চালাতে উৎসাহ দিয়েছিলেন তিনি।
সেই বক্তব্যের ব্যাখা করে ট্রাম্প বলেন, আলোচনার হাতিয়ার হিসেবে তিনি এমন হুমকি দিয়েছেন। তার মতে, অনেক অর্থ থাকা সত্ত্বেও ন্যাটোর এই সব দেশের সুরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এগিয়ে আসার কোনো অর্থ হয় না৷। ন্যাটোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র তার ন্যায্য ভাগ দিতে প্রস্তুত, তবে বাকি সবার ঘাটতি মেটাতে চায় না তার দেশ।
ন্যাটোর ৩২টি সদস্য দেশের মধ্যে ১১টি দেশ বর্তমানে জিডিপি-র কমপক্ষে দুই শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করছে।
ন্যাটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গের মতে, চলতি বছর মোট ১৮টি দেশ সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে চলেছে। তিনি বলেন, সাধারণ সুরক্ষা বলয় সম্পর্কে কোনো সংশয় ন্যাটোকে দুর্বল করে তুলবে। ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলার প্রেক্ষাপটে বাকি দেশগুলোও আগের তুলনায় নড়েচড়ে বসেছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।
জিবি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার অন্য কিছু বিতর্কিত মন্তব্যেরও ব্যাখ্যা করেন। নির্বাচনে হেরে গেলে গোটা দেশে রক্তগঙ্গা বয়ে যাবে বলে তিনি যে হুমকি দিয়েছেন, তা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি শিল্পের ক্ষেত্রে প্রজোয্য। বিদেশ থেকে গাড়ি আমদানির ওপর শুল্ক চাপিয়ে প্রতিযোগিতার বাজারে নিজস্ব গাড়ি শিল্পের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চান ট্রাম্প। তিনি ইলেকট্রিক গাড়ির প্রচলন বাড়াতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নীতির তীব্র সমালোচনা করেন। তার মতে, এর ফলে মূলত চীনেরই ফায়দা হচ্ছে।
আবার ক্ষমতায় এলে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে বেআইনি অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে আরও জোরালো উদ্যোগের ঘোষণা করেন। মেক্সিকো সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করলে বেআইনি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রত্যর্পণ করার হুমকি দেন ট্রাম্প। বিশেষ করে অপরাধীদের অবিলম্বে বিদায় করতে তিনি বদ্ধপরিকর। এ ক্ষেত্রেও তিনি বাইডেনের কড়া সমালোচনা করে চলেছেন।