ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ হাজার ৮১৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে ১৩ হাজারের বেশি শিশু। পবিত্র রমজান মাসেও খাবার পাচ্ছে না লাখ লাখ মানুষ। অনেকে ঘাস দিয়ে ইফতার করতে বাধ্য হচ্ছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় গাজায় মোট নিহত ৩১ হাজার ৮১৯ জন। আহত হয়েছেন ৭৩ হাজার ৯৩৪ জন। খবর আনাদুলু এজেন্সির
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী উপত্যকাজুড়ে নয়টি গণহত্যা সংঘটিত করেছে। এতে নিহত হয়েছে অন্তত ৯৩ জন। আহত হয়েছে ১৪২ জন।
গাজা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকে আছে। উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।’
সম্প্রতি সিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল জানান, হাজারো শিশু এ যুদ্ধে হতাহত হয়েছে। তাদের অনেককেই এখনো শনাক্ত করে উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া যায়নি। কেননা তারা কোথায় আছে, আমরা তা জানি না।
তিনি বলেন, আমি শিশুদের একটি ওয়ার্ডে ছিলাম। তারা ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছে। ওয়ার্ডের পরিবেশ ছিল খুবই শান্ত। কারণ, শিশুদের কান্না করার মতো শক্তি ছিল না।
রাসেল বলেন, ইসরাইল ‘গণহত্যা’ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ২০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনির দুর্ভিক্ষের শিকার হওয়া ঠেকাতে সাহায্য ও সহায়তার জন্য গাজায় সহায়তাবাহী ট্রাকগুলো নিয়ে যাওয়া ছিল ‘বিশাল আমলাতান্ত্রিক চ্যালেঞ্জ’।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী, ইসরায়েল আগ্রাসনে গাজার প্রায় ২৩ লাখ মানুষ বাস্তুহারা হয়েছেন। এই অবস্থায় খাবার প্রবেশ করতে না পারায় অনাহার সংকট প্রকট থেকে প্রকটতর আকার ধারণ করছে।
আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সামান্য পরিমাণ আটা সংগ্রহের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করছে গাজাবাসী। এটি এখন দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে।
সম্প্রতি জাতিসংঘ সমর্থিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর গাজার ৭০ শতাংশেরও বেশি মানুষ ভয়ানক খাদ্য সংকটে রয়েছে। কিছু মানুষ পশুর খাবার ও আগাছা খেয়ে জীবন ধারণ করছে।