অনলাইন থেকে বিশেষ কিছু সার্কিট সংগ্রহ করে ডিজিটাল ওজন মেশিন রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ওজন কম-বেশি করার কৌশল রপ্ত করেন তারা। এরপর বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা পণ্য কিনতে আসলে কারসাজির মাধ্যমে তারা ওজনে কম দিতেন। এভাবে প্রতারণা করে আসছিল একটি চক্র। অবশেষে চক্রটির চারজনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন— সিরাজুল ইসলাম ওরফে সজিব (৩৩), মো. মনির (৩৫), মো. লিটন (৩৮), মো. আলাউদ্দিন খাঁন (২৮)। এসময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি ডিজিটাল ওজন মেশিন, সাতটি রিমোট কন্ট্রোল, তাতালসহ ওজন মেশিন কারসাজির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। সম্প্রতি রাজধানীর কাপ্তান বাজারে অভিযান চালিয়ে চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
রোববার (১৭ মার্চ) দুপুরে ডিবির নিজ কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডিবি জানায়, হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানার পশ্চিম বাজার এলাকার মৃত রুক্কু মিয়ার ছেলে সিরাজুল ইসলাম ওরফে সজিব। তিনি পেশায় একজন ইলেকট্রিক মেকানিক। সে অনলাইন থেকে বিশেষ সার্কিট ও রিমোট সংগ্রহ করে ডিজিটাল ওজন মেশিন কারসাজি করে। ফলে ২০০ কেজি পণ্যের ওজন দূরে বসে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ইচ্ছে মতো কমাতে পারে। এগুলো সে বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। মেকানিক সজিব প্রতিটি মেশিন অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করত। এই চক্রের কাছে ওজন কম দেওয়ার সাংকেতিক শব্দ হলো ‘গাপসি’। এর অর্থ হলো ওজনে কম দিতে হবে।
ডিবি আরও জানায়, এই সকল মেশিন কাপ্তান বাজারে অসাধু পাইকারি মুরগি বা মাংস বিক্রেতারা ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করত। তবে তাদের টার্গেট থাকে নতুন পণ্য বিক্রেতা ও পাইকারি ক্রেতারা। তবে তারা পুরাতন পাইকারি ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করত না। পণ্যের ওজন কম বলাটা এক ধরনের চুরি। এই মেশিনের যন্ত্রপাতি যারা বিক্রি করে, প্রতারণার বিষয়টি বিক্রেতারা জানে কি না এই বিষয়ে তাদেরকেও আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব।
ডিবিপ্রধান বলেন, আমরা নতুন ধরনের একটি অপরাধ চক্রকে গ্রেফতার করেছি। আমরা অভিযানে নেমে দেখলাম ঢাকার পাইকারি বাজারগুলোতে ওজনে কম দেওয়া হচ্ছে। রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ওজনে কম দেওয়া চক্রের চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।