অনুসন্ধানী প্রতিবেদক: শামছুল আযম
দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধের অংশ হিসেবে আরোপিত লকডাউন নিয়ে ঈদ উপলক্ষে এবং রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানা খুলে দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এক প্রকার হ য ব র ল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে আর লকডাউনের কার্যকারিতা আছে বলে মনে করেন না করোনা মোকাবেলায় গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা.মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ৷জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, ফাইল ছবি
তিনি দেশের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে লকডাউন এবং করোনা পরিস্থিতি নিয়ে রীতিমতো হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এই পর্যায়ে যখন ১ জুলাই থেকে ১৪ দিনের লকডাউন আরোপ করা হয়েছিল, তখন কিন্তু সংক্রমণ কমে আসছিল৷ আমাদের কমিটির পক্ষ থেকে তখন আরো ১০ দিন লকডাউন দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু সেটা না করে ঈদ উপলক্ষে লকডাউন তুলে দেওয়া হলো৷ ফলে আগের ১৪ দিনের লকডাউনে সংক্রমণকে যে থামানো সম্ভব হয়েছিল, সেটা আবার শুরু হলো। অর্থাৎ আবার বাড়তে থাকলো সংক্রমণ। এর পর দ্বিতীয় দফায় এবার গাদাগাদি করে যেভাবে পোশাক কর্মীদের ঢাকায় আনা হলো, তাতে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকলো না৷ সংক্রমণ এখন আরো বেড়ে যাবে, বলছেন করোনা মোকাবেলায় গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ৷ শিল্প-কারখানা খুলে দেওয়ায় এভাবে ঢাকায় ফেরায় সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের ৷
তিনি বলছেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি আর লকডাউনের (বিধিনিষেধ) পক্ষে না৷ প্রশাসন যদি এভাবে লকডাউন না মানাতে পারে, তাহলে আমার মনে হয়, আর লককডাউন আরোপ করাটা আর ঠিক হবে না ৷ বরং লকডাউন না করে বিধিনিষেধগুলো মানানো খুবই জরুরি৷ এক্ষেত্রে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া যাবে না।’
এ ক্ষেত্রে তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তিনি বলছেন, প্রথমত, এ অবস্থায় অফিস-কারখানা খুললেও বেশিরভাগ মানুষের ঘরে থেকে কাজ করার বিষয়টি এবং গণপরিবহণ, দোকান, কল-কারখানায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে৷ দ্বিতীয়ত, ব্যাপক হারে করোনা পরীক্ষা করাতে হবে। তার ভিত্তিতে আইসোলেশন ও কোয়ারান্টাইনের বিষয়গুলোতে জোর দিতে হবে৷ তৃতীয়ত, প্রতি মাসে এক থেকে দেড় কোটি মানুষকে কোভিড-১৯ প্রতিরোধী টিকা দিতে হবে৷ এই বিষয়গুলো যদি নিশ্চিত করা যায়, তাহলে আর লকডাউনের প্রয়োজন নেই৷