আগের ম্যাচে দুইশ পার হলেও এবার লাগাম ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। এদিন ডেথ ওভারে দারুণ বোলিং করেছেন মোস্তাফিজুর রহমানরা। শেষ ৫ ওভারে মাত্র ৪৩ রান নেয় শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় উইকেটে ৪২ বলে ৬৬ রান যোগ করলেও এরপর তিন জুটিতে বিশের বেশি রান করতে পারেনি সফরকারীরা। এখানেই পিছিয়ে পড়ে দলটি। ষষ্ঠ ও শেষ জুটিতে ফিফটি (৫৩) পার হলেও বল হজম হয়েছে ৩৭টি।
লঙ্কানদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৭ রান করেন কামিন্দু মেন্ডিস। কুশল মেন্ডিসের ব্যাট থেকে আসে ৩৬ রান। ম্যাথুজ ৩২ ও শানাকা ২০ রানে অপরাজিত ছিলেন। মাঝে ১৪ বলে ২৮ রান করেন আসালাংকা। বাংলাদেশের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন তাসকিন, মেহেদী, মোস্তাফিজুর ও সৌম্য।
উইকেটের মিছিলেও চলছে লঙ্কা ঝড়: নবম ওভার থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাচ্ছে। তবে রানের চাকা ঠিকই সচল রেখেছেন সফরকারী দলের ব্যাটাররা। আগের ম্যাচের মতো এবারও ঝড় শুরু করেন চারিথ আসালাংকা। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজকে সঙ্গে নিয়ে এগোচ্ছিলেন। শেখ মেহেদীকে দুই ছক্কায় যেন সেই বার্তাই দিলেন। তবে ত্রিশের আগেই তাকে থামিয়ে দেন মেহেদী। ১৪ বলে ২৮ রানে বোল্ড করে লঙ্কান অন্তর্বর্তীকালীন অধিনায়ককে ফেরান মেহেদী। এর আগে সামারাবিক্রমাকে সাজঘরে ফেরান মোস্তাফিজুর রহমান। ক্রিজে ম্যাথুজের সঙ্গী শাসুন শানাকা। ১৪ ওভার শেষে দলটির রান ৫ উইকেটে ১১৪।
সিলেটে ‘মেন্ডিস’ ঝড় থামালেন সৌম্য: প্রথম ৩ ওভার পর্যন্ত শান্ত ছিলেন কামিন্দু মেন্ডিস-কুশল মেন্ডিস। তাসকিন আহমেদের করা চতুর্থ ওভার থেকে ঝড়ের শুরু। মাঝে পাওয়ার প্লে-র পর রিশাদ হোসেন একমাত্র মিতব্যয়ী ছিলেন। নিজের প্রথম ওভারে দেন মাত্র ৪ রান। দিশেহারা অধিনায়ক শান্ত নবম ওভারে নিয়ে আসেন সৌম্য সরকারকে। তাতেই বাজিমাত। ২২ বলে ৩৬ রান করা কুশল মেন্ডিসকে ফেরান উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করে। তার আউটে ভেঙে যায় ৪২ বলে ৬৬ রানের জুটি। ক্রিজে কামিন্দুর সঙ্গী সামারাবিক্রমা। ৯ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার রান ২ উইকেটে ৬৯।প্রথম ৩ ওভারে ৮ রান, পরের ৩ ওভারে ৪১
প্রথম ওভারে মেডেন দিয়ে ইনিংস শুরু করেন শরিফুল ইসলাম। দলীয় দ্বিতীয় ওভারে এসে উইকেট তুলে নেন তাসকিন আহমেদ। মিড উইকেটে খেলতে গিয়ে আকাশে বলে তুলে দেন আভিষ্কা ফার্নান্দো। ৭ বল খেলে শূন্য রানে ফেরেন এই ওপেনার। আভিস্কার আউটের পর ক্রিজে আসেন কামিন্দু মেন্ডিস। তাসকিনকে চার মেরে খোলেন রানের খাতা। অন্যপ্রান্তে থাকে কুশল মেনিড ততক্ষণে হাত খুলে খলা শুরু করেন।
প্রথম তিন ওভারে এই দুই পেসার মার ৮ রান দিলেও এর পর যেন খেই হারিয়ে ফেলে। তাসকিন চতুর্থ ওভারে দেন ১৭ রান, শেখ মেহেদী পঞ্চম ওভারে এসে দেন ৯ রান। পাওয়ার প্লে-র শেষ ওভারে মোস্তাফিজ দেন ১৫ রান। শুরুর ধাক্কা সামলে পাওয়ার প্লেতে ঘুরে দাঁড়ায় শ্রীলঙ্কা, পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেট হারিয়ে দলটির রান ৪৯।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি বাংলাদেশ। প্রথমটিতে হারায় সিরিজ বাঁচাতে হলে এই ম্যাচে জয় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায় ।
চায়ের নগরী সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে লড়বে বাংলাদেশ। দ্বীপ রাষ্ট্রটির সঙ্গে সোমবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়েছে এই সিরিজ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায় টস জিতে বোলিং নিয়েছে বাংলাদেশ। একাদশে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি।
বাংলাদেশের একাদশ: লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী অনিক, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, শেখ মাহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান।
দেড় বছর পর সিরিজের হারের মুখে: তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ ০-১ ব্যবধানে পিছিয়ে আছে। আজকের ম্যাচটা যদি বাংলাদেশ জিততে না পারে তাহলে প্রায় দেড় বছর পর প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারবে বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্তর দলের সামনে এখন সিরিজ বাঁচানোর লড়াই। সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে এই দলের পথচলা শুরু হয়। এরপর আয়ারল্যান্ড, আফগানিস্তানের পর সিরিজ জেতে লাল সবুজের দল। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাটিতে জিততে না পারলেও হারেনি, সিরিজ ড্র হয়েছে।
৩ রানে হারের বেদনা: জাকের আলীর অবিশ্বাস্য ইনিংস আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ঝড়ো ফিফটির পরও তীরে এসে তরী ডুবলো। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০৭ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ থামে ২০৩ রানে। মাত্র ৩ রানে হেরে সিরিজে স্বাগতিক শিবির পিছিয়ে পড়লো ১-০ ব্যবধানে।
মুখোমুখি দেখা: টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এর আগে ১৪ ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। তাতে জয়ের পাল্লা অবশ্য লঙ্কানদের দিকেই বেশি ভারী। তারা জিতেছে ১০টি ম্যাচ। বাংলাদেশের জয় তাদের প্রায় অর্ধেক, ৪ ম্যাচ। আর বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত শ্রীলঙ্কাকে কোনো সিরিজেই হারাতে পারেনি। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পরিসংখ্যানও কথা বলছে লঙ্কানদের হয়ে। এই মাঠে দুই দল দুটু ম্যাচ খেলে, প্রতেকটিতেই জয় পেয়েছিল লঙ্কানরা।