গাজা-মিশরের সীমান্ত পয়েন্ট রাফাতে লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকদিন থেকে সেখানে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। সেখানে থাকা প্রায় দশ লাখ মানুষকে তাড়িয়ে দিতে চায় তারা।
গাজায় ইসরায়েল হামলা চালানোর পর প্রথম রাফা সীমান্ত খোলা হয়েছিল। ওই সীমান্ত দিয়েই গাজায় ত্রাণ এবং মানবিক সাহায্য পাঠানো হচ্ছিল। কিন্তু রাফা সীমান্ত দিয়ে আশ্রয় নেয়া মানুষকে গাজা ছাড়তে দেয়নি মিশর। সেখানে প্রায় দশ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
এবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, রাফা সীমান্ত দিয়ে এবার সাধারণ মানুষকে গাজার বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।
তবে মিশর আগেই জানিয়েছে যে, গাজার সাধারণ মানুষ ও উদ্বাস্তুদের তারা কোনোভাবেই গ্রহণ করবে না।
গাজার দক্ষিণে অবস্থিত রাফা। গাজা স্ট্রিপে ইসরায়েল হামলা শুরু করার পর প্রথমে আক্রমণ চালানো হয়েছিল উত্তরে। সে সময় বেসামরিক মানুষকে দক্ষিণে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। গত সপ্তাহে নেতানিয়াহু গাজার দক্ষিণে অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
রোববার নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, বেসামরিক মানুষের উপস্থিতিতে সেখানে অভিযান চালানো হবে না। রাফা থেকে সাধারণ মানুষকে অন্যত্র যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। তারা যাওয়ার পরেই অভিযান শুরু হবে।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্যে পৌঁছেছেন জার্মান চ্যান্সলর ওলফ শলৎস। দুই দিনের সফরে তিনি নেতানিয়াহু সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে তিনি বলেছেন, সাধারণ ফিলিস্তিনের জনগণের মৃত্যু হচ্ছে। যেভাবেই হোক এই মৃত্যু বন্ধ করতে হবে। লড়াই যত দীর্ঘ হবে, মানুষের মৃত্যুও তত বাড়বে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলিদের দ্রুত ছাড়ার আবেদনও করেছেন শলৎস।
গাজার আল শিফা হাসপাতাল ঘিরে রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে একের পর এক গুলি চালানো হচ্ছে। ইসরায়েলের এক সামরিক মুখপাত্র দাবি করেছেন, হামাস যোদ্ধারা ওই হাসপাতালের ভেতরে পুনরায় সংগঠিত হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩১ হাজার ৬৪৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৭৩ হাজার ৬৭৬ জন।
গাজায় হতাহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু। সেখানে এখন পর্যন্ত গাজায় ১৩ হাজার শিশুকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। যেসব শিশুরা বেঁচে আছে তারা গুরুতর অপুষ্টিতে ভুগছে, এমনকি এসব শিশুর কান্না করার মতো শক্তিটুকুও অবশিষ্ট নেই।