ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। ফলে বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে যাত্রীদের।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) নগরীর কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে নানা ভোগান্তি পেরিয়ে যারা বাড়ি এসেছিলেন, ঈদ শেষে তারাই আবার লঞ্চ ও বাসে গাদাগাদি করে এখন কর্মস্থলে ফিরছেন। এসময় যাত্রীরা অভিযোগ করেন বাস মালিকরা ৪৫০ টাকার ভাড়া এখন ৭০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন।
সাদ্দাম হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, বরিশাল থেকে গোল্ডেন লাইন পরিবহনে ঢাকা পর্যন্ত অন্য সময়ে ৫০০ টাকা টিকিট হলেও এখন ৭০০ টাকা নিয়েছে। কয়েকটি বাস কাউন্টার ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে, ফলে বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়া দিয়েই যেতে হচ্ছে।
আরেক যাত্রী শহীদুল বলেন, বাস কর্তৃপক্ষ অন্যান্য সময়ের তুলনায় অতিরিক্ত ভাড়াতো নিচ্ছেই পাশাপাশি চলতি পথে ইচ্ছেমতো গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠায়। বরিশাল থেকে ঢাকা পুরো পথেই এমন ঘটনা ঘটে। এ রুটে প্রশাসনের কোনো নজরদারি চোখে পড়ে না।
সুমন নামের ঢাকাগামী আরেক যাত্রী বলেন, আগে ঈদের ছুটিতে লঞ্চেই বরিশাল আসা যাওয়া করা হতো। পদ্ম সেতু চালুর পর থেকে বাসেই আসা যাওয়া করি। তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টায় ঢাকা-বরিশাল আসা-যাওয়া করা যায়। কিন্তু এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বাস সংশ্লিষ্টরা।
তবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি অসীম দেওয়ান জাগো নিউজকে বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া যাত্রীদের সুবিধার্থে বাস টার্মিনাল এলাকায় বুথ বসানো হয়েছে। সেখানেও কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ঈদের কয়েকদিন আগে থেকেই যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘব ও যানজট নিরসনে বাস মালিক গ্ৰুপ ও প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করছে। যার সুফল যাত্রীরা পাচ্ছে। মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যে কোনো যানজট ছাড়াই বাড়ি ফিরেছে, এখন কর্মস্থলে ফিরছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটনের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক বিভাগ) রুনা লায়লা বলেন, সাধারণ মানুষ যেন নিরাপদে এবং ভোগান্তি ছাড়া কর্মস্থলে ফিরতে পারে তা নিশ্চিতে বাস টার্মিনাল ও লঞ্চ ঘাট এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া সড়কে যেন গাড়ি রেখে কেউ ভোগান্তি না তৈরি করে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া আছে। ভোগান্তিমুক্ত যাত্রার নিশ্চয়তা দিতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।
এদিকে, রোববার (১৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বরিশাল নদী বন্দর থেকে ১৩টি সরাসরি ও একটি ভায়া লঞ্চ যাত্রী নিয়ে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।
প্রতিটি লঞ্চেই যাত্রীর সংখ্যা স্বভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত ছিল। যাত্রীরা বলেন, ঈদের ছুটি শেষে অতিরিক্ত যাত্রী হয়েই তাদের কর্মস্থলে ফিরতে হয়েছে। তবে যাত্রীর এ চাপ আরও দুই তিন দিন থাকবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) যুগ্ম পরিচালক বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জাগো নিউজকে বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তায় বন্দর কর্তৃপক্ষ সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। লঞ্চ যাতে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ছাড়তে না পারে সেজন্য জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট টিমের পাশাপাশি আমরাও সার্বিক সহায়তা করছি।