এবার রাজকে নিয়ে মুখ খুললেন পরীমনি

গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে পরীমনির সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় রাজের। তার আগে নানা বিষয় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘তর্কযুদ্ধে’ জড়ান এই দম্পতি। শেষমেশ সেপ্টেম্বর মাসে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় দুই তারকার। এরপর কিছুদিন তাঁদের দুজনের কেউই মিডিয়ার সামনে কোনো মন্তব্য করেননি। নিজের মতো করে যাঁর যাঁর কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছিলেন। সবকিছুই স্বাভাবিকই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ শনিবার কলকাতায় বসে আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে ২৮ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে পরীমনির মুখে তাঁর সাবেক স্বামী রাজের প্রসঙ্গে উঠে আসে। এতে একপর্যায়ে রাজের প্রতি হুমকিস্বরূপ কথাও উঠে আসে।
ভিডিওর একাংশে উপস্থাপক পরীমনিকে প্রশ্ন করছিলেন, কিছুদিন আগে সন্তান পদ্ম অসুস্থ হয়ে কলকাতায় এসেছিল। সেই সময় কোনো কাজে রাজও কলকাতায় অবস্থান করছিলেন। রাজ পদ্মকে নিয়ে ভালোবাসার ইমোজি দিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন, এটাকে কীভাবে দেখো তুমি? উপস্থাপকের এ কথা শুনে হাসেন পরীমনি। একধরনের তাচ্ছিল্যের সুরেই পরীমনি বলেন, ‘ওই স্ট্যাটাস না দিলে আমার বাচ্চা ভালো হতো না। আমার ও আমার বাচ্চার জন্য স্ট্যাটাসটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা খুবই উপকৃত হয়েছি ওই স্ট্যাটাসের কারণে।’

এরপর নাম প্রকাশ না করলেও রাজকেই ইঙ্গিত করে ক্ষোভ ঝেড়ে পরীমনি বলেন, ‘আমরা যখন আলাদা হয়ে যাই, তখন থেকেই বাচ্চার কোনো খোঁজ নেয়নি সে। এসব স্ট্যাটাস, ভুয়া ভাবনা থেকে। বাচ্চাকে ওন (আপন) না করেই কেউ যদি বলে বেড়ায় যে সে বাচ্চাকে ওন করে, সেটাকে ভুয়া ছাড়া আর কী বলা যেতে পারে। ওই মানুষটিকে আমি ছাড়ব না। যাঁরা মায়েরা আছেন, যাঁরা বাচ্চা গর্ভে ধারণ করেন, তাঁরা বুঝবেন, আমি কোন জায়গা থেকে এই কথাগুলো বলছি।’
ওই একই প্রশ্নের উত্তরে এই নায়িকা আরও বলেন, ‘ভুয়া সম্পর্ক দিয়ে বাচ্চাকে ইস্যু করে এখানে কেউ কোনো কিছু বলার বা দাবি করার কোনো সুযোগ নেই। এ পর্যন্ত যে মানুষটি বাচ্চার কোনো খবরই নেয়নি। আর নেবেই–বা কেন? বাচ্চা তো শুধুই আমার। জন্মের পর থেকে বাচ্চার সব দায়িত্বই তো আমি নিয়েছি, আমিই পালন করছি। আমারই থাকবে। বাচ্চার জন্য আর কারোর দরকার নেই। ওই মানুষটির নাম আমি মুখে আনতে চাই না। উচ্চারণই করব না। দরকারও নেই।’

ভিডিওতে রাজকে নিয়ে ঢাকাই সিনেমার পরীমনির ভাষ্য, ‘ওই মানুষটির প্রতি রাগ, ক্ষোভ, অভিমান আছে। কিন্তু তার প্রতি কোনো আবেগই কাজ করে না আমার। তার প্রতি ভালোবাসা, সম্মান একদমই নেই। আর যেখানে ভালোবাসা, সম্মান থাকে না, রাগ থেকে খেপে গিয়ে একটা কথা বলতে গেলে মানুষ অসম্মানিত হয়। সে আমার বাচ্চার বাবা, এ বিষয়টি তো মুছে ফেলতে পারব না। এ কারণে তাকে নিয়ে অসম্মানজনক কথা মুখে আনতে পারি না। তবে সে যতটুকু অসম্মান ডিজার্ভ করে, সেটুকু থেকে তাকে তো বাঁচাতে পারব না। সেই অসস্মানটা পুরো দুনিয়া নয়, আমিই তাকে করব। কারণ, সে সেটি ডিজার্ভ করে।’

উপস্থাপক আরেকটি প্রশ্নে পরীমনির কাছে জানতে চান, এই যে পরীমনি একজন অভিনেত্রী। মেয়ে মানুষ হিসেবেই কি তাঁর ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে বারবার বেশি চর্চিত হয়েছে? সেই বিষয়টি নিয়ে লড়াইটা করো কীভাবে? এমন প্রশ্নে পরীমনি উত্তর দেন, ‘চর্চা হোক, সেটা আমার কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু আগে যতটা না নেগেটিভলি হয়েছে, একটা সময় এসে পজিটিভই বেশি হয়েছে।’

এরপর উপস্থাপক বলেন, সেটি জানতে চাই। পরিমনি বলেন, ‘আমি যখন জেল থেকে বের হই, তখন সেটি লক্ষ করেছি। সেই সময় আমি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিলাম। মানসিক, এমনকি শারীরিকভাবেও সামনে এসে মানুষ আমাকে সাহস জুগিয়েছেন। তাঁরা আমার রক্তের কেউ নন, তারপরও তাঁদের অনেকে এসে আমাকে বলেছেন, “তোমাকে কেউ গুলি করতে আসলে সামনে দাঁড়িয়ে যাব আমরা।” এই যে তাঁরা দাঁড়াতে চান, কেন চান? নিশ্চয়ই আমার কাজের গুণে তাঁরা আমার জন্য ঝুঁকি নিতে চাইছেন। হয়তো কেউ কেউ বলবেন, আপনার সিনেমা তো ফ্লপ। তাহলে? হ্যাঁ, কাজের চাইতে পরীমনি নামটাই আমাকে মানুষের কাছে বেশি পৌঁছে দিয়েছে। মানুষের বেশি ভালোবাসা দিয়েছে। তার জন্য আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ।’

Check Also

জুয়া কান্ডে গ্রেফতার বলিউড তারকা!

জুয়া কাণ্ডে গ্রেফতার বলিউড তারকা সাহিল খান। ভারতের ছত্তিশগড় থেকে আটক করা হয় এ তারকাকে। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *