কে পাচ্ছে নৌকার টিকেট! বিএনপি ছাড়াই নির্বাচন!
কে পাচ্ছে নৌকার টিকেট! বিএনপি ছাড়াই নির্বাচন!

কে পাচ্ছে নৌকার টিকেট! বিএনপি ছাড়াই নির্বাচন!

কে পাচ্ছে নৌকার টিকেট! বিএনপি ছাড়াই নির্বাচন! > স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আসছে না বিএনপি। এবারই প্রথম সিটি নির্বাচনে অংশ না নেয়ার কথা জানান বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার। তিনি বলেন, এই সরকারের অধিনে কোন নির্বাচনই সুষ্ঠ নির্বাচন হবে না।

এজন্যই বিএনপি এই সরকারের অধিনে কোন নির্বাচনে অংশও নেবেন না। বিএনপি নির্বাচনে না আসলেও নৌকার টিকেট পেতে ব্যস্ত ক্ষমতাসীন দলের একাধিক নেতাকর্মীরা। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের মধ্যে দেখা দিয়েছেন একাধিক মেয়র প্রার্থী।

কেন্দ্র থেকে কে পাবেন দলের নৌকার টিকেট! তা নিয়েও দেখা দিয়েছে নানা আলোচনা। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে আপন চাচা খোকন ও ভাতিজা সাদিক’র লড়াই। চাচা-ভাতিজা ছাড়া মনোনয়ন পাওয়ার প্রাত্যার্শী যুবলীগ নেতা খান মামুন ও বরিশাল শিক্ষা বোর্ড ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. জিয়াউল হকও আছেন মাঠে।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন বিসিসি’র আসন্ন নির্বাচনে বর্তমান সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল¬াহ ও তার আপন চাচা খোকন সেরনিয়াবাতের মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। মনোনয়ন পেতে বর্তমান মেয়রের চাচা খোকন সেরনিয়াবাত প্রকাশ্যেই বিগত দিনের সকল ব্যর্থতার দায়ভার ভাতিজার কাধে চাপিয়ে মনোনয়ন বাগিয়ে নেবার জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।

তবে বর্তমান মেয়র ও বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল¬াহ তার চাচার বিষয় তেমন কোন মাথা না ঘামালেও থেমে নেই তার লবিং তদ্বির। নির্বাচন কমিশনের ভোটের তারিখ ঘোষণার পর বরিশাল বিভাগীয় শহরের সিটি নির্বাচনকে ঘিরে মহানগরীসহ পুরো দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে এখন আলোচনা তুঙ্গে।

জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম বলেন, বিসিসিতে হালনাগাদ ভোটার ২ লাখ ৭৫ হাজার ১৭৭ জন। সূত্রমতে, ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সর্বশেষ নির্বাচনে মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল¬াহ। ইতোমধ্যে তিনি আবার প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

তবে দলীয় মনোনয়ন পেতে এবার তিনি পরিবারের ভেতরে ও পরিবারের বাহিরে প্রতিদ্বন্ধিতার মুখে পরবেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মনোনয়নে চমকও থাকবে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পরেছে। মেয়র সাদিক আব্দুল¬াহ ছাড়াও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বোন আমেনা বেগমের ছোট ছেলে ও মেয়র সাদিক আব্দুল¬াহর একমাত্র চাচা আবুল খায়ের আব্দুল¬াহ খোকন সেরনিয়াবাত ও মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন এবং বরিশাল শিক্ষা বোর্ড ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. জিয়াউল হক।

আবুল খায়ের আব্দুল¬াহ খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে আমি আগামী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন চাইবো। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করবো। তিনি আরও বলেন, বরিশালের মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ পেলে সেবায় শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে পারি। কারণ বরিশাল নগরবাসী অবহেলিত, সেবা থেকে বঞ্চিত।

বর্তমান সরকারের সময় দেশে এতো উন্নয়ন কিন্তু বরিশাল নগরীতে কোন উন্নয়ন হয়নি। বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল¬াহর ছোট ভাই এবং বর্তমান সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল¬াহর ছোট চাচা বর্তমানে বরিশাল নগরীর কালুশাহ সড়কের ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছেন।

আবুল খায়ের আব্দুল¬াহর বাবা তৎকালীন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভয়াল কালরাতে যখন শহীদ হন তখন আবুল খায়ের আব্দুল¬াহ ওই রাতে দুই পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েও ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান। তবে তিনি কখনো রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হননি। কয়েক বছর দেশের বাহিরে এবং খুলনায় নিজের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়েই অনেকটা নিভৃতে ছিলেন। তবে মাঝেমধ্যে তিনি বরিশালে আসতেন এবং এলাকার লোকজনের সাথে সময় কাটাতেন। যোগ দিতেন বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে।

থাকতেন ভাড়া বাড়িতে। আবুল খায়ের আব্দুল¬াহ প্রথম রমজানে তার মায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে নগরীর কালুশাহ সড়কের ভাড়া বাড়িতে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করেন। একই সময়ে নগরীর কালীবাড়ি সড়কের সেরনিয়াবাত ভবনে পৃথক দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করে নগর ও জেলা আওয়ামী লীগ। আবুল খায়ের আব্দুল¬াহর দোয়া অনুষ্ঠানে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের বেশ কয়েকজন বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর (সাবেক শহর) আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর আমিন উদ্দীন মোহনসহ জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন।

ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, এবারের অনুষ্ঠানের ভিন্ন তাৎপর্য ছিলো। কারণ সামনে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। দলের বঞ্চিত নেতাকর্মীরা আবুল খায়ের আব্দুল¬াহর রাজনীতিতে আগমনকে ইতিবাচক হিসেবেই নিয়েছেন। তার মার্জিত, উদার দৃষ্টিভঙ্গি সবাইকে আশাবাদী করে তুলেছে।

পাশাপাশি দলের ভেতরে একটি বড় অংশের মধ্যে সুপ্ত যে ক্ষোভ রয়েছে, সাবেক অনেক নেতাকর্মী এবং বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরের সেখানে উপস্থিতি তারই বহিঃপ্রকাশ।

আবুল খায়ের আব্দুল¬াহ বলেন, বরিশাল নগরীর মানুষের যে উন্নয়নের আকাঙ্খা, যে স্বপ্ন, যে সেবা পাওয়ার কথা ছিল, তা তারা পাননি। আমি যখন এই শহরের মানুষের সাথে কথা বলি, তখন অনুভব করি, তাদের যে সম্মান পাওয়া উচিত, তা তারা পাননি। উন্নয়ন পাননি, সেবা পাননি। এই অসহায়ত্ব আমাকে পীড়া দেয়। তিনি আরও বলেন, একটি এলাকার উন্নয়নে মূল ভূমিকা রাখেন রাজনীতিবিদরা। সেখানে রাজনৈতিক নেতৃত্ব যদি ব্যর্থ হয়, তখন তা থমকে পরে।

বরিশালের মানুষের যা প্রয়োজন, এখন তা পাচ্ছেন বলে আমার মনে হয়না। আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী যুবলীগ নেতা মাহমুদুল হক খান মামুন বলেন, আমি আওয়ামী লীগের দুঃসময় থেকে শুরু করে দলের নেতাকর্মীদের বিপদ ঝাপিয়ে পড়েছি।

দলের স্বার্থে জনগণের পাশে ছিলাম আছি ইনশাআল¬াহ ভবিষ্যতেও থাকবো। বরিশালের স্থানীয় জনগন থেকে শুরু করে বরিশাল সিটির ৩০ টি ওয়ার্ডের অধিকাংশ কাউন্সিলরবৃন্দ সাবেক কাউন্সিলরবৃন্দ আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা তাকে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করতে অনুরোধ জানালে জনগণের পাশে থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে বরিশাল সিটিকে একটি আধুনিক স্মার্ট বরিশাল বিনির্মানে ভূমিকা রাখতে চান বলে জানান। একটি স্মার্ট সিটি গড়ে তুলতে সর্বপ্রথম প্রয়োজন সুশিক্ষা দক্ষতা জন সম্পৃক্ততা।

আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তিনিও বলেছেন যোগ্যতা সম্পন্ন সুশিক্ষিত নেতৃত্বের মাধ্যমেই বিনির্মান হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে মনোনয়ন চাইবেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত যা-ই থাকুক, এতো বছর নগরবাসীর সেবায় কাজ করায় জনগণ আমাকে ভোট দেবেন।

গত সাড়ে চার বছরে বরিশাল সিটি অনেক পিছিয়ে রয়েছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, আমার বাড়ির সামনের সড়ক দিয়ে রিকশা পর্যন্ত চলতে পারেনা। নির্বাচনের বিষয়ে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল¬াহর কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

চাচা ভাতিজা’র বাইরে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে বেশ নিরবেই কাজ করে যাচ্ছেন বরিশাল মহানগর আওয়ামী যুবলীগ এর এই যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব মাহমুদুল হক খান মামুন। জানাগেছে, তিনি বরিশাল সদর আসনের সংসদ ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম এমপি’র বলয়ে থেকেই কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও নির্বাচনী মাঠ ঘোচানোর কাজ ইতোমধ্যেই সম্পূর্ণ করেছেন।

মাহমুদুল হক খান মামুন আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাদের মধ্যে অন্যতম তিনি দলের দুঃসময় থেকে শুরু করে বরিশালের রাজনীতির প্রাণভোমরা হিসেবেও ক্ষ্যাতী লাভ করে। বারবার বঞ্চিত খান মামুন এবার বেশ আট ঘাট বেধে নেমেছে বলেও তার নির্বাচনী প্রচার প্রচারনায় তা ফুটে উঠেছে।

জানাযায়, বরিশাল সদর ৫ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হওয়ার পর পর ই পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয় কর্নেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম এমপি কে। তার বিগত চার বছরে প্রথম নির্বাচিত হয়ে বরিশাল সদর আসন সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারের নানামুখি উন্নয়ন মূলক কাজ করায় বেশ প্রশংসিত ও প্রধানমন্ত্রীর আস্থালাভ করেন।

ফ্রি শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট  এ পড়ুন: আম আঁটির ভেঁপু গল্পের জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (PDF)

আর তার নির্বাচনের পূর্ব মূহুর্ত থেকে বরিশাল মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব মাহমুদুল হক খান মামুন তার পাশে বিশ্বস্ততার সঙ্গে ছায়ার মতো থেকে নানান রকমের উন্নয়নে সাংগঠনিক কার্যক্রমে গুরু ভূমিকা পালন করে আসায় তার বিষয় গ্রীন সিগনাল টা পাওয়া এবার অস্বাভাবিক নয় বলেও মনে করেন স্থানীয় আঃলীগ নেতৃবৃন্দরা।

এদিকে পরিবারের চাচা ভাতিজা যেকোনো একজনকে মনোনয়ন দিলে পারিবারিক দন্দ এড়াতে উভয়কে এবার বাদ দিয়ে বিকল্প ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশী বলে ধারণা করছেন কেন্দ্রীয় একাধিক নেতৃবৃন্দরা। সে দিক থেকে বিবেচনা করলে তৃতীয় প্রার্থী হিসেবে যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব মাহমুদুল হক খান মামুন বা দলের নতুন চমক হিসেবে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. জিয়াউল হক এর বিকল্প নেই বলা চলে।

তবে দলের সভাপতি সহ মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্ত ছাড়া কোন কিছু বলা সম্ভব হবে না বলেও জানান কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা। বিএনপির কেন্দ্রী যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল সিটির প্রথম মেয়র এ্যাড.মজিবর রহমান সরোয়ার সময়ের বার্তাকে বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশনুযায়ী এই সরকারের অধিনে বিএনপি এবার সিটি নির্বাচনে যাবেন না একই কথা বললেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. বিলকিস জাহান শিরিনও।

তবে বিএনপি নির্বাচনে না গেলেও আওয়ামীলীগের পাশাপাশী জাতীয় পার্টি ও চরমোনাইর দল ইসলামিক শাসনতন্ত্র আন্দোলন অংশ নেবেন এমনটাই শুনা যাচ্ছে।

যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন। এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে। 

Check Also

দেশে আমদানি না করেই ২‘শ থ্রি হুইলারের বিআরটিএ‘র রেজিস্ট্রেশন!

দেশে আমদানি না করেই ২‘শ থ্রি হুইলারের বিআরটিএ‘র রেজিস্ট্রেশন!

দেশে আমদানি না করেই ২‘শ থ্রি হুইলারের বিআরটিএ‘র রেজিস্ট্রেশন! ।। এম. লোকমান হোসাঈন ॥ জাল-কাগজপত্র …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *