পটুয়াখালীর বাউফলে মৌসুমি নামের দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বিষপান করে আত্মহত্যা করায় তোলপাড় চলছে। মৌসুমিকে তার প্রেমিক সাজিদ আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মৌসুমি উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামের নিজাম উদ্দিন হাওলাদারের মেয়ে এবং স্থানীয় কনকদিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিলেন। আর সাজিদ একই গ্রামের শহিদ মৃধার ছেলে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা যায়, মৌসুমিকে স্কুলে যাওয়ার পথে প্রায়ই উত্যক্ত করত সাজিদ। এক পর্যায়ে মৌসুমিকে ফাঁদে ফেলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে সে। দীর্ঘদিন প্রেম করার পর বিয়ের আশ্বাস দিয়ে সাজিদ তার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। কয়েকদিন আগে সাজিদ হঠাৎ করেই মৌসুমির সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এরপর মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে মৌসুমি।
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মৌসুমি কীটনাশকপান করে। এ সময় তার বাসায় কেউ ছিল না। কীটনাশক পান করে বমি শুরু করলে প্রতিবেশীরা টের পেয়ে মৌসুমিকে দ্রুত বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ খবর পেয়ে লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।
মৌসুমির মা সালেহা বেগম বলেন, আমার একমাত্র মেয়ে মৌসুমিকে ঘরে রেখে সকালে মাঠে ছাগল চড়াতে যাই। এরপর খবর পাই সে কীটনাশক পান করেছে। সাজিদ বখাটে ও মাদকাসক্ত। আমার একমাত্র মেয়েকে সে আত্মহত্যায় বাধ্য করেছে। আর যেন কোনো মায়ের কোল এভাবে খালি না হয়। আমি সাজিদের যথাযথ বিচার চাই।
ঘটনার পর সাজিদ আত্মগোপণ করায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বলেন, মৃত্যুর আগে একটি চিরকুট লিখে রেখে যায় মৌসুমি। ওই চিরকুটে সাজিদের কারণে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে বলে উল্লেখ করেছে। চিরকুটটি পুলিশ নিয়ে গেছে। সাজিদ এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত। আরও একাধিক মেয়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক রয়েছে বলেও তিনি জানান।
বাউফল থানার ওসি (তদন্ত) মো. আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। ওই চিরকুটে কি লেখা রয়েছে তা তদন্তের স্বার্থে এই মুহুর্তে বলা যাচ্ছে না।