অরুণাচল প্রদেশে সম্প্রতি নতুন একটি টানেলের উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর নাম সেলা টানেল। এই টানেলের মাধ্যমে দুর্গম এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সুরক্ষিত হবে বলে দাবি করেছে ভারত সরকার।
অরুণাচল প্রদেশে চীনের সীমান্ত সংলগ্ন শহর তাওয়াং। ওই এলাকা অত্যন্ত দুর্গম। টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, সেলা টানেলের মাধ্যমে তাওয়াংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা আরও সহজ হয়েছে। যেকোনও আবহাওয়াজনিত পরিস্থিতিতেই এই টানেলের মাধ্যমে তাওয়াংয়ের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করা যাবে।
অরুণাচল সীমান্তে চীনের সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ লেগেই থাকে। সেলা টানেল উদ্বোধনের পর দুই দেশের পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে উত্তর-পূর্ব সীমান্তে চাপা উত্তেজনার আভাস মিলেছে। ভারত ওই এলাকায় সীমান্ত সুরক্ষিত করার জন্য বহু সৈন্য মোতায়েন করেছে। এর কড়া জবাব দিয়েছে চীন।
নরেন্দ্র মোদি সেলা টানেল উদ্বোধনের এক দিন আগে চীন জানায়, সীমান্তে সৈন্য মোতায়েন করে বিরোধের মোকাবেলা করা যাবে না। তবে সীমান্তে শান্তি বজায় রাখাই তাদের উদ্দেশ্য বলে দাবি করে বেইজিং।
খবরে বলা হয়েছে, আসামের তেজপুর এবং অরুণাচলের তাওয়াংয়ের সংযোগরক্ষাকারী সড়কে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩ হাজার ফুট উচ্চতায় সেলা টানেল তৈরি করা হয়েছে। সড়কপথে এই অংশের দূরত্ব ৩২৭ কিলোমিটার।
অরুণাচল প্রদেশের সেলা টানেল ভারতের কূটনীতিগত অবস্থানের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এটি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার (লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বা এলএসি) কাছাকাছি।
অরুণাচলের প্রান্তে অবস্থিত তাওয়াংয়ের সঙ্গে এত দিন বাকি দেশের যোগাযোগের একমাত্র পথ ছিল সেলা পাস। ওই গিরিখাতের মাধ্যমেই তাওয়াংয়ে যেতে হত। সেলা পাস হামেশাই তুষারপাত এবং ভূমিধসের কারণে বন্ধ হয়ে যায়। সে সময়ে তাওয়াং বাকি অংশের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এই সেলা পাসেরই ৪,২০০ মিটার গভীরে সেলা টানেল খোঁড়া হয়েছে।
সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব সীমান্তে নতুন করে ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে ভারত। ওই জওয়ানেরা এর আগে পশ্চিম দিকের সীমান্তে নিযুক্ত ছিলেন।
ভারতের এই পদক্ষেপের পর চীন বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, যে সীমান্ত এলাকায় দুই দেশ যৌথ ভাবে শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করছে, সেখানে ভারতের আরও সেনা মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত আপত্তিকর।
সেলা টানেল উদ্বোধনের পর চিনের পিপল্স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) অরুণাচলকে ‘চীনা ভূখণ্ডের অংশ’ বলে উল্লেখ করেছিল। ভারতও পাল্টা জবাব দিয়েছে।