বরিশালে টাকা ও স্বর্ণের সঙ্গে ফ্রিজের মাংসও নিয়ে গেছে চোর

বরিশালে ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ফ্ল্যাটে ঢুকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ ফ্রিজের মাছ-মাংস, বাথরুমের কল, লাইটসহ মূল্যবান মালামাল নিয়ে গেছে চোর।

নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ড এলাকার আলম মনজিল ভবনের একটি ফ্লাটের দরজার তালা ভেঙে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিচুর হক। ভুক্তভোগী ব্যাংক কর্মকর্তা আবু তাহেরের ধারণা শুক্রবার এ ঘটনা ঘটেছে। তাহের ওই ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। ঈদের ছুটিতে সপরিবারে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি।

তাহের বলেন, শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে দরজার নিচ দিয়ে পানি গড়িয়ে সিঁড়ি ভিজে যেতে দেখেন পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়ারা। এ বিষয়টি তখন তারা বাড়িওয়ালা শামসুল আলম ও তার স্ত্রীকে জানান। বাড়ির মালিক ঘটনাস্থলে গিয়ে চুরির বিষয়টি নিশ্চিত হন।

আবু তাহের বলেন, আট মাস আগে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে এই ফ্ল্যাটে উঠেছি। ইতোপূর্বেও এখানে চুরির ঘটনা ঘটেছিল এবং থানাও অভিযোগ করেছিলাম। কিন্তু কেউ আজ পর্যন্ত ধরা পড়েনি।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিচুর হক বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে ওই ব্যাংক কর্মকর্তার আগের করা দুটি জিডিও তদন্ত করে দেখা হবে।

আবু তাহের আরও বলেন, ঈদের আগের দিন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলাম। চুরির সংবাদ পেয়ে শুক্রবার বিকেলে বাসায় দেখি ঘরের ভেতরের জিনিসপত্র এলোমেলো। ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার আগে রান্নাঘরে মসলা রাখার কৌটার মধ্যে চেইন ও কানের দুলসহ দেড় ভরির ওপরে স্বর্ণালঙ্কার রেখে যায় আমার স্ত্রী। আর আলমারির ভেতরে সংসার খরচের ২২ হাজার টাকা রাখা ছিল। কিন্তু চোরেরা রান্না ঘরের সেই মসলার কৌটা থেকে স্বর্ণালঙ্কার, আলমারির তালা ভেঙে নগদ টাকা, ফ্রিজের ভেতরে থাকা মাছ-মাংসের প্যাকেট, বিভিন্ন কক্ষের লাইট, এমনকি বাথরুমের পানির কল ও পাইপ পর্যন্ত খুলে নিয়ে গেছে।

আবু তাহের আরও বলেন, পানির কলগুলো নিয়ে যাওয়ায় সেখান থেকে ট্যাংকির পানি বের হয়ে পুরো ঘর ভিজে যায়। এ কারণে বাসার মধ্যের জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে।

এ বাড়িতে তেমন কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরা আছে, অথচ আগেরবার চুরির ঘটনার পর ফুটেজ দেখতে চাইলে মালিক বলেছিলেন, সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ ছিল। আর এখন চুরির ঘটনার পর সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজের কথা বললে জানিয়েছেন, সিসিটিভি ক্যামেরা নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।

বাড়িওয়ালার স্ত্রী আয়েশা বেগমের দাবি গত ডিসেম্বর মাসে তাদের নিজেদের এবং সামনের বাসা চুরি হয়। আর তখন সিসি ক্যামেরা নষ্ট হয়ে গেলে আর তা ঠিক করা হয়নি। একাধিক ক্যামেরার তার ছিঁড়ে ফেলায় বিরক্ত হয়ে তা আর মেরামত করা হয়নি।

আলম মনজিলের মালিক শামসুল আলম বলেন, বারবার ওই ব্যাংক কর্মকর্তার ফ্ল্যাটে চুরি হয় আর কোনো ফ্ল্যাটে চুরি হয় না। তিনি বাসায় ওঠার পর থেকে এ নিয়ে তিনবার চুরি হয়েছে। কিন্তু এর আগে কখনও আমার বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেনি।

তবে বাড়িটির অন্যান্য বাসিন্দা জানিয়েছেন, সর্বশেষ ঘটনার দিনই বাড়ির পাঁচতলার এক ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভেতরে চোরেরা ঢুকলেও কিছু খোয়া যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। শুধু মালামাল তছনছ করে রেখে গেছেন তারা।

Check Also

কোটি টাকার তেল চুরি করছে পায়রা বন্দর!সহযোগিতা করছেন, ডিপো-ঠিকদার আলো!

কোটি টাকার তেল চুরি করছে পায়রা বন্দর!সহযোগিতা করছেন, ডিপো-ঠিকদার আলো!

কোটি টাকার তেল চুরি করছেন পায়রা বন্দর!সহযোগিতা করছেন মেঘনা ডিপো-ঠিকদার আলো! ।। এম. লোকমান হোসাঈন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *