নিখোঁজের ছয় মাস পর নিজ ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা লাশের সন্ধান পাওয়া গেছে। শনিবার রাতে এমনই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার সংবাদ মিলে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দি ইউনিয়নের মধ্য কাটাখালী গ্রামে।
জানা যায়, মধ্য কাটাখালী গ্রামের মৃত জয়নুল আবেদিন গাজীর স্ত্রী রিজিয়া পারভিন ছয় মাস আগে নিখোঁজ হন। নিখোঁজের ছয় মাস পর শনিবার রাতে তার ছেলে রাসেল গাজী ও রাসেলের স্ত্রী রাবেয়া বেগম দাবি করেন তার মাকে হত্যা করে ঘরের ভেতরে পুঁতে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি খুঁড়ে মানুষের কঙ্কালের সন্ধান মিলে।
রিজিয়া পারভীনের লাশ দাবি করে তার ভাই হুমায়ুন কবির মাসুদ অজ্ঞাত আসামি করে বাকেরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিহতের একমাত্র ছেলে রাসেল গাজী যুগান্তরকে জানান, আমি ও আমার স্ত্রী চাকরির সুবাদে ঢাকাতে থাকি। সর্বশেষ ছয় মাস আগে আমার মায়ের সঙ্গে কথা হয়। এর পর আর আমাদের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ছিল না। এবার রোজার ঈদে বাড়িতে এসে মায়ের থাকার একমাত্র তালাবদ্ধ ঘরের একাংশ ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দেখি ঘরের মেঝেতে একটি অংশে লেপ ও কাঠের গুঁড়ির কিছু অংশ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।
এতে আমার সন্দেহ হলে সেগুলো সরিয়ে কবর সাদৃশ্য কিছু দেখতে পাই। পরে আমরা মাটি খুঁড়ে আমার মায়ের লাশের সন্ধান পাই। তিনি এ সময় অভিযোগ করেন, আমার বা আমার মায়ের সঙ্গে এলাকায় কারও শত্রুতা নেই। তবে কিছু দিন আগে আমার প্রতিবেশী লালচান আমাকে ও আমার মাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এই ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে লাল জড়িত থাকতে পারে।
তবে লালচান এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এলাকার সবাই জানে রাসেল গাজী টাকার জন্য প্রায়ই তার মাকে মারধর করতেন। এ ধরনের ঘটনা রাসেল গাজী নিজে ঘটিয়ে আমাকে দায়ী করার চেষ্টা করছেন। আমিও চাই এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আফজাল হোসেন যুগান্তরকে বলেন, আইনি জটিলতার কারণে লাশ তুলতে বিলম্ব হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলে লাশ উত্তোলন করা হবে। রিজিয়া পারভীনের ঘরে যে লাশ সাদৃশ্য কঙ্কাল পাওয়া গেছে, তা তার কিনা এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া বলা সম্ভব নয়। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পাহারায় আছেন।