বরিশালে বিবাহিত-শ্রমিক নেতা দিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি! ।। এম. লোকমান হোসাঈন ॥ প্রায় একযুগ পর বরিশালে বিবাহিত ও শ্রমিক নেতা দিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করে রীতিমত বিতর্ক ও হাস্যরস সৃষ্টি করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
একদিকে এই কমিটি নিয়ে যেমন হাস্যরস সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে দেশের সবচেয়ে প্রাচীন এ ছাত্রসংগঠনটির গঠনতন্ত্র তোয়াক্কা না করায় নগরীর জুড়ে বিতর্ক চলছে।
ছাত্র সংগঠনটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অছাত্র, বিবাহিত বা কোন শ্রমিক ছাত্রলীগের কোন কমিটিতে অনুন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন না। এমন নির্দেশনার থাকার পরও একাধিক বিবাহিত ও অছাত্রদের দিয়ে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে ।
- আরো পড়ুন: পর্তুগালে নার্সারি থেকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন?
- আরো পড়ুন: নরওয়েতে উচ্চশিক্ষাঃ জেনে নিন বিস্তারিত
অপরদিকে প্রকৃত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে শ্রমিক ও অছাত্রদের দিয়ে কমিটি দেওয়ায় সমালোচনার ঝড় বইছে নগরীজুড়। সাধারণ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে প্রশ্ন, দলের নেতৃত্ব তাহলে কাদের হাতে যাচ্ছে? শ্রমিক নেতা, অছাত্র, নাকি বিবাহিতদের হাতে? আর আগামীর বরিশাল ছাত্ররীগের ভবিষ্যতই বা কী?
গত ২৩ জুলাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তীতে দেখা যায়, বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে শ্রমিক নেতা ও সন্তানের বাবা রইজ আহমেদ মান্নাকে। মান্নাকে আহ্বায়ক করে আগামী ৩মাসের জন্য ৩২ সদস্য বিশিষ্ট্য কমিটি দেয়া হয়েছে। যার অধিকাংশ বিবাহিত, শ্রমিক নেতা এবং অছাত্র।
বরিশালে বিবাহিত-শ্রমিক নেতা দিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি!
বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর থেকে ছাত্রলীগের কমিটিকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ সহ সর্বত্র চলছে সমালোচনার ঝড়। ছাত্রলীগের সাবেক এবং বর্তমান নেতাকর্মীরা সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমে বিবাহিত, অছাত্র এবং মাদক ব্যবসায় জড়িতেদের দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন হয়েছে বলে দাবি করে আসছেন। যাদেরকে কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে, তারা সবাই বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর আস্থাভাজন বলে পরিচিত।
সময়ের বার্তা’র কাছে প্রাপ্ত তথ্যমতে দেখা যায়, মান্নার নামে একাধিক মামলা রয়েছে, নেই ছাত্রত্ব। বিয়ে করেছেন কয়েক বছর আগেই, স্ত্রী শিরিন আক্তার, শিরিন-মান্না দম্পতির সংসারে আট বছরের একটি ছেলে সন্তান। দ্বিতীয় স্ত্রীর সংসারে রয়েছে একটি কন্যা সন্তান।
মান্নার দ্বিতীয় স্ত্রী বরিশাল মেরিস্টপ ক্লিনিকে কমর্রত ছিলেন বলে একটি সূত্রে নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া রইজ আহমেদ মান্না বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সক্রিয় ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে দলীয় পরিচয় পাল্টে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। মান্না সাম্প্রতিক সময়ে সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর আর্শীবাদে বরিশাল শ্রমিক ফেডারেশনের সদস্য পদ বাগিয়ে নেন। সদ্য কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুর রহমান শাকিল ও মো. মাইনুল ইসলাম উভয়ের নেই ছাত্রত্ব।
কিছুদিনপূর্বে বিয়ে করেছেন। উক্ত বিয়ে অনুষ্ঠানে উভয়ের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল সিটি মেয়র ও বরিশাল মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
সদস্য বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির বাকি ২৯ জন সদস্যদের মধ্যে অধিকাংশই অছাত্র, বিবাহিত ও বিভিন্ন মামলার সাথে জড়িত এবং বিতর্কিত।
- আরো পড়ুন: শিক্ষা ভিসার আবেদন নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
- আরো পড়ুন: ট্রাক ভাড়ার ব্যবসায় সফল হতে ১০ টিপস
- আরো পড়ুন: প্রবাস জীবন: এক ভাইয়ের বাস্তাব ব্যর্থ জীবন থেকে নেওয়া
সদ্য কমিটির আহ্বায়ক মো. রইজ আহমেদ মান্নার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও ফোনে পাওয়া যায়নি। যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুর রহমান শাকিলের ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি ফোন রিসিভ করে সাংবাদিক পরিচয় জানার পর, শাকিল ওয়াশরুমে আছে বলে ফোন কেটে দেন।
পরবর্তীতে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। যুগ্ম আহ্বায়ক মো: মাইনুল ইসলামকে ফোন করা হলে তার ব্যবহৃত ফোন রিসিভ করেননি। বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে, তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
যুক্ত হোন ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।