বরিশাল কাজীপাড়ার সেই শালা-দুলাভাইর নতুন নাটক! ভাটয়ারা মামলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চাঁদাবাজী মামলা থেকে রক্ষা পেতে ভাটয়ারা মামলার নাটক সাজিয়ে প্রতিপক্ষকে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীর দাবী আসামীরা চাঁদাবাজী মামলা আড়াল করতে একটি ভাটয়ারা মামলা করেন। তাদের দাবী ওই মামলার কোন ভিত্তি নাই। কারন ভাটয়ারা মামলার বাদীরা যেখানে সম্পত্তি দাবী করছেন, সেখানে তাদের বাবা জীবিত থাকা কালীন সময়ে ভাগ ভাটয়ারা করে বিক্রি করে গেছে।

তাও প্রায় ১৫ বছর আগের ঘটনা। এখন আবার নতুন একটি নাটক সাজিয়েছেন। মূলত তারা বিভিন্ন সময়ে তাদের কাছে চাঁদা দাবী করায় তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চাঁদাবাজী মামলা করা হয়েছে। সেই মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই এই মামলা করা হয়েছে। বরিশাল কাজীপাড়ায় শালা-দুলাভাইর চাঁদাবাজীর সংবাদ প্রকাশের পর তদন্তে নামে মহানগর পুলিশ। পুলিশের হাত থেকে বাচঁতে এবং ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে তরিগড়ি করে একটি ভাগ বাটয়ারা মামলা করা হয়েছে আদালতে।



বিবাদী শেখ শাখাওয়াত হোসেন পলোর দাবী, তার ভাইয়ের ছেলে তারেকুর রহমান ও তারেকের দুলাভাই আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ১৯ মে একটি চাঁদাবাজী মামলা করা হয়েছে। মামলায় দাবী করা হয়েছে, শাখাওয়াতের কাছ ১০লাখ টাকা দাবী করা হয়েছে। দাবীকৃত ১০ লাখ টাকা না দিলে হত্যা করা হবে পিতাসহ মেয়েকে। এমন অভিযোগ এনে ১৯ মে চাঁদাবাজ তারেক ও আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে বরিশাল আদালতে চাঁদাবাজী মামলা করা হয়েছে।

বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বরিশাল  মেট্রোপলিটন এর গোয়েন্দা শাখা ডিবি পুলিশকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ প্রদান করেন। নথি সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল নগরীর ২২ নং ওয়ার্ড পশ্চিম বগুড়া, কাজীপাড়া এলাকার বাসীন্দা শেখ শাখাওয়াত হোসেনের মেয়ে সায়মা আফরীন মিসু বাদী হয়ে ১৯ মে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামী করা হয়েছে একই এলাকার বাসীন্দা মো: আলমগীর হোসেন সেন্টু (৪০) ও তারেকুল ইসলাম তানভীর (২৮)।

মিসুর দাবী পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তির আংশিক কিছু অংশ বিক্রির উদ্যেশে বালু দিয়ে ভরাট করার সময় আসামীরা তাদের কাছে দশ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। দাবীকৃত চাঁদা না দিলে জমি বিক্রিতে বাধার পাশাপাশী হত্যার হুমকি প্রদান করেন আসামীরা।

চলতি বছরের ২৮ মার্চ একজন ক্রেতা জমি দেখতে আসলে দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র সহ আলমগীর হোসেন সেন্টু (৪০) ও তারেকুল ইসলাম তানভীর (২৮) সহ অজ্ঞাত নামা আরও ৫/৬জন সন্ত্রাসীরা বাদী এবং বাদীর বাবার উপর হামলা চালিয়ে মারাত্মক জখম করেন ও প্রাণ নাশের হুমকির পাশাপাশী, বাদীর ঘরের ভিতর বন্ধি করে রাখেন। বাদীর ঘরের জানালার কাঁচ ভাঙচুর চালায়। ঘটনার পর বরিশালের বিজ্ঞ আদালতে চাঁদাবাজী সহ বেশ কিছু ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন শেখ শাখাওয়াতের মেয়ে সায়মা আফরীন মিসু।

বিচারক মামলাটি বরিশাল কোতায়লী মডেল থানা পুলিশকে তদন্তের আদেশ প্রদান করেন। যাহার মামলা নং- সি আর ১০৩/২০২১। মৌখিক ভাবে অপরাধ স্বীকার করে আসামীরা স্থানীয় গণ্যমান্যদের মাধ্যমে বাদী ও বাদীর পিতার কাছে আপোষ মিমাংসার প্রস্তাব দেন। পরবর্তিতে আদালত থেকে মামলাটি তুলে নেন বাদী মিসু।

যদিও মামলা তুলে আনার কিছুদিন যাবার পর আসামীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। একই বছরে ১৬ মে সকাল ৯ দিকে উক্ত জমিতে বালু ভরাটের জন্য গেলে আবারো ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে বালু ভরাট কাজে বাধা প্রদানে পাশাপাশী সন্ত্রাসীরা হত্যার হুমকি প্রদান করেন। পরে বরিশাল বিজ্ঞ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে দন্ড বিধি আইনের ১৪৩/৪৪৮/৩২৩/৪২৭/৩৮৫/৩৮৭/৫০৯ এবং ৫০৬ (২) ধারা সহ একাধিক ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।



যাহার মামলা নং-সি আর ১৩০/২০২১। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি পুলিশকে তদন্ত করার নির্দেশ প্রদান করেন। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আদালতে পূনরায় মামলা করায় মামলার বাদী সহ তার পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে হত্যার হুমকি প্রদানের পাশাপাশী গুম করার হুমকি দিয়ে আসছেন। জুলাই মাসে সময়ের বার্তায় চাঁদাবাজদের

বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে পুলিশ প্রশাসনসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার। এদিকে চাঁদাবাজী ও হত্যার হুমকি প্রদানের ঘটনা আড়াল করতে একটি নতুন নাটক সাজিয়ে ভাটয়ারো মামলা করেন আদালতে। ওই মামলায় দাবীকৃত অভিযোগের বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, বাদীর দাবিকৃত সম্পত্তি মূলত তার পিতা শেখ সুলতান জীবিত থাকা কালীন সময়ে স্থানীয় ভাবে ভাগ ভাটয়ারা করে তার প্রাপ্ত ২৬ শতাংশ সম্পত্তি থেকে ১৩শতাংশ ৩০পয়েন্ট সম্পত্তি

বিক্রি করে গেছে। যাদের কাছে উক্ত সম্পত্তি বিক্রি করা হয়েছে তারা তাদের নিজ নিজ নামে নামজারী করে উক্ত সম্পত্তি র্দীঘদিন যাবত ভোগদখল করে আসছেন। যার ফলে প্রমান হয় এটা বাদী সহ তার দুলাভাই চাঁদাবাজী মামলা থেকে বাচতে একটি নাটক সাজিয়েছেন মাত্র। এছাড়া সময়ের বার্তা’র প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দেখা যায় ২০০৪ সালের সেপ্টম্বর মাসের ৫ তারিখ দুই ভাই শাখাওয়াত ও তার বড় ভাই মৃত সুলতান আহম্মেদ পারিবারিকভাবে ভাগ বাটয়ারা করেন। পরে সুলতান

আহম্মেদ তার প্রাপ্ত সম্পত্তি থেকে সাড়ে ১৩.৩০ শতাংশ জমি নিজেই বিক্রি করে যায় শাখওয়াতের বড় ভাই শেখ সুলতান আহম্মেদ। আসামীরা স্থানীয় চাঁদাবাজ খ্যাত সহ আলমগীর হোসেন একটি হত্যা মামলার চার্জসিটভুক্ত আসামী। এলাকায় তাদের অত্যাচারে ঠিক মত বসবাস করতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। এবিষয় প্রশাসনে সহযোগিতা কামনা করছেন। শাখাওয়াত হোসেন ও তার পরিবার।

যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন। এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।

Check Also

কোটি টাকার তেল চুরি করছে পায়রা বন্দর!সহযোগিতা করছেন, ডিপো-ঠিকদার আলো!

কোটি টাকার তেল চুরি করছে পায়রা বন্দর!সহযোগিতা করছেন, ডিপো-ঠিকদার আলো!

কোটি টাকার তেল চুরি করছেন পায়রা বন্দর!সহযোগিতা করছেন মেঘনা ডিপো-ঠিকদার আলো! ।। এম. লোকমান হোসাঈন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *