রোগীকে টাকার জন্য আটকে রাখায় গ্রেফতার ৩

টাকার জন্য রোগী আটকে রাখার অভিযোগে ‌‘বরিশাল হেলথ কেয়ার ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ। গ্রেপ্তার তিনজনসহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনকে আসামি করে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগি নাছিমা বেগম। মামলা নং ৪১/২৫১।

আসামিরা হলো- ভান্ডারিয়ার মাটিভাঙ্গার আঃ মজিদ খানের ছেলে ও মালিক বরিশাল হেলথ কেয়ার ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মোঃ নিয়াজুর রহমান, রুপাতলীর আহম্মদ মোল্লা সড়কের মৃত হাতেম আলী হাওলাদারের ছেলে ও মালিক বরিশাল হেলথ কেয়ার ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মোঃ সাঈদ, ভোলার আলী নগরের আঃ মালেকের ছেলে মোঃ জাবেদ (২৫) ।

মামলা সূত্রে জানা য়য়- নাছিমা বেগম বিভিন্ন বাসা বাড়ীতে কাজ করেন। তার বড় মেয়ে মুনিয়া (১২) বাড়ীতে থাকাকালীন গত ১৩ এপ্রিল মিনি স্ট্রোক করেন। এ সময় শরীরের বাম পাশ্ব সামান্য অবাস হয়। ভুয়া ডাক্তার জাবেদ আলী মুনিয়ার অসুস্থতার কথা শুনে বরিশাল শের-ই-বাংলা হাসপাতালে তার অনেক পরিচিত ডাক্তার আছে এবং কম খরচে চিকিৎসা করিয়ে দিবে বলে ১৬ এপ্রিল সকালে ভোলা থেকে লঞ্চযোগে বরিশালে এনে শের-ই-বাংলা হাসপাতালে না নিয়ে নগরীর ৯নং ওয়ার্ডের প্যারারা রোডের “বরিশাল হেলথ কেয়ার ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার” নিয়া যায়। তখন মুনিয়াকে ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ডা: মোঃ হাবিবুর রহমান তালুকদার মুনিয়াকে দেখে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা দেন। এ সময় ক্লিনিকের স্টাফরা পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য ১৫ হাজার ৭৫০ টাকা দাবি করেন। এতো টাকা দিতে পারবে না জানালে বরিশাল হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক মালিক অর্থাৎ মোঃ নিয়াজুর রহমান ও মোঃ সাঈদ বলেন যা আছে তা দেও এবং বাকি টাকা বাড়ি থেকে এনে দ্রুত জমা দেও। তাদের কথামতো ৮ হাজার টাকা দেয়া হয়। মুনিয়কে ক্লিনিক থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাকি টাকাসহ ক্লিনিকে ভর্তির টাকা পরিশোধ করতে বলেন। টাকা নেই জানালে ক্লিনিক থেকে মুনিয়কে নিয়ে যেতে দিবে না বলে হুমকি প্রদান করে। মুনিয়া রাতে ভিষন অসুস্থ থাকা সত্বেও ক্লিনিক থেকে তাকে কোন ঔষধ দেয়নি এবং খোঁজ খবরও নেয়নি। মুনিয়ার চিকিৎসার কাগজপত্র দেখিয়ে সদর রোড ও গীর্জ মহল্লার বিভিন্ন দোকান ও পথচারীদের কাছে ভিক্ষা করে টাকা জোগার করা শুরু করেন নাছিমা বেগম। এসময় স্থানীয়রা তাকে ভিক্ষা করার কারন জিজ্ঞাসা করলে তাদের কাছে চিকিৎসার বিষয়ে বিস্তারিত বলেন। তখন স্থানীয় লোকজন নিয়ে মোঃ নিয়াজুর রহমান ও মোঃ সাঈদের পরিচালিত বরিশাল হেলথ কেয়ার ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে প্রদানকৃত টাকা ফেরৎ চাওয়াসহ মুনিয়ার নাম কেটে দেয়ার জন্য বললে আসামিরা টাকা ফেরৎ দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তাৎক্ষনিক বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থল এসে মুনিয়াকে উদ্ধার করেন এবং আসামীদের গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।

কোতয়ালী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আমানউল্লাহ আল-বারি বলেন- আটকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামীদের আটকে তৎপরতা চালানো হচ্ছে।

Check Also

কোটি টাকার তেল চুরি করছে পায়রা বন্দর!সহযোগিতা করছেন, ডিপো-ঠিকদার আলো!

কোটি টাকার তেল চুরি করছে পায়রা বন্দর!সহযোগিতা করছেন, ডিপো-ঠিকদার আলো!

কোটি টাকার তেল চুরি করছেন পায়রা বন্দর!সহযোগিতা করছেন মেঘনা ডিপো-ঠিকদার আলো! ।। এম. লোকমান হোসাঈন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *