সচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাকে ঘর দেওয়ায় ক্ষোভ!।। আবেদন করেও ঘর পাননি অসচ্ছলরা।। স্টাফ রিপোর্টার ॥ অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় সচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার জন্য বরাদ্দ্য করা হচ্ছে সরকারী বরাদ্দ্যকৃত ঘর। প্রকৃত অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদারা ঘর না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করছেন।
বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলছেন, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ্যকৃত ঘর প্রদানের দায়িত্বে মুক্তিযোদ্ধা নিবাস শীর্ষ প্রকল্পে নামক কমিটির।
জেলা প্রশাসনের দায়িত্ব হচ্ছে, যেসকল অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা ঘর পাবার জন্য আবেদন করেছেন, তাদের নাম-ঠিকানা ও আবেদনকৃত কাগজপত্র সঠিক কিনা যাচাই-বাছাই করা।
বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার সময়ের বার্তাকে আরো জানান, তার অধিনস্ত কোন কর্মকর্তা উক্ত কাগজপত্র যাচাই-বাছাইকালে কোন অনিয়মে জড়িয়ে পড়লে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- আরো পড়ুন: বিমা ব্যবসায়ের মূলনীতি
- আরো পড়ুন: নৌবিমা কী? নৌবিমা ও নৌবিমাপত্রের শ্রেণিবিভাগ
- আরো পড়ুন: যানবাহন ও দুর্ঘটনা বিমা কী? দুর্ঘটনা বিমার প্রকারভেদ
ঘর পাননি এমন অসচ্ছল কোন মুক্তিযোদ্ধা জেলা প্রশাসক বরাবর ঘরের জন্য আবেদন করলে ওই মুক্তিযোদ্ধার জন্য তিনি কর্তপক্ষর কাছে সুপারিশ করবেন বলে সময়ের বার্তাকে জানান।
এদিকে চলতি বছরের ১০ মার্চ নির্বাহী অফিসার মনিরুজ্জামানের স্বাক্ষরিত পত্রে দেখাযায়, বরিশাল নগরীতের দ্বিতল ভবনের মালিক ও চাকরিজীবি এমন একজন সচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ঘর পাইয়ে দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছেন, নির্বাহী অফিসার মনিরুজ্জামান।
স্বাক্ষরিতপত্রে দেখাযায়, বরিশাল সদর উপজেলায় ২য় পর্যায়ে বীর নিবাস নির্মাণের জন্য অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে একশত একাত্তর জন অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রস্তুুত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য, বরিশাল জেলা প্রশাসক বরাবর ওই তালিকা জমা দেন।
তালিকার ৩০ নং ক্রমিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: শামসুদ্দিন মোল্লা‘র নাম অন্তভূক্ত করেছেন। শামসুদ্দিন মোল্লা‘র ঠিকানা দেখানো হয়েছে, বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের সারসি এলাকার বাসীন্দা।
প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে,৩৩৫৫ দাগের ৯৪ নং খতিয়ান, চরবুখাই নগর এ ৪ শতাংশ সম্পত্তির মালিক শামসুদ্দিন মোল্লা। তবে তার কোন ঘর নাই। সময়ের বার্তার হাতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দেখা যায়, কাশিপুর ইউনিয়ন এ চরবুখাই নগর নামে কোন মৌজাই নাই।
এছাড়া শামসুদ্দিন মোল্লা বরিশাল নগরীর কাউনিয়া ১নং ওয়ার্ড, বাসুমিয়ার সড়কে, বায়তুল ফিরোজা নামকরণ করে ২০১০ সালে প্রায় কোটি টাকা খরচ করে, দ্বিতল বাড়ি নির্মাণ করেছেন। যার হোল্ডিং নং-১৩৭৪-০০০।
বিভিন্ন এলাকায় নামে-ব্যানামে বহু সম্পত্তির মালিক বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া তিনি বরিশাল ল’কলেজ চাকরী করছেন। একাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধারা অভিযোগ করে সময়ের বার্তাকে জানান, সরকার অচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যে প্রকল্প হাতে নিয়েছেন, এটা আসলেই প্রশংসার যোগ্য।
তবে আমাদের মাঝে বহু অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা আছেন, যাদের বাস্তবেই কোন ঘর-বাড়ি নাই। ১৭১ জন অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রস্তুুতকৃত তালিকা সঠিক তদন্ত করলে দেখা যাবে, অনেকই সচ্ছল আছেন।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা সময়ের বার্তাকে জানান, তিনি গত কয়েক বছর যাবত একটি ঘর পাবার জন্য জেলা প্রশাসকসহ সরকারী কর্মকর্তাদের কাছে আবেদন করে আসছেন। রহস্যজনক কারণে এখনো ঘর পাচ্ছেন না তারা।
জীবন-যৌবনের শেষ সময়ে এসে আদৌ সরকারী ঘর পাবেন কি-না তা নিয়েও সন্দেহের ভিতর আছেন এই মুক্তিযোদ্ধা। বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন সময়ের বার্তাকে বলেন, ‘অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পে বরিশাল সদরে ৩০ নং ক্রমিকে একজন সচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম দেখেছি।
আসলে আমাদের মধ্যে এখনো বহু অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধারা আছেন তারা অন্যের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। আবার কেউ কেউ আছেন, যাদের অল্প পরিমাণে জমি আছে, কিন্তু ঘর নাই। তাদের বাদ দিয়ে একজন সচ্ছল ব্যক্তিকে ঘর দেয়া বিষয়টা রহস্যজনক।’
- আরো পড়ুন: যৌনস্বাস্থ্যের ব্যাপারে নারী কেন কম কথা বলেন?
- আরো পড়ুন:নারীর যৌনাঙ্গে ইনফেকশন হলে যা করবেন
- আরো পড়ুন:যে কারনে যৌনতায় নারীরা আগ্রহ হারান প্রথম বছর
বরিশাল সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার ও বরিশাল সদর সহকারী ভূমি কমিশনার তারিকুল ইসলাম সময়ের বার্তাকে বলেন, ‘অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর দেয়া হবে না।
কেউ তথ্য গোপন করে ঘর নেওয়ার চেষ্টা করলে তা যাচা-বাছাই করে বাতিল করা হবে।’ এবিষয় অভিযুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: শামসুদ্দীন মোল্লা‘র ব্যহৃত মুঠোফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন। এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।