এতিমখানা মাদ্রাসার নামে প্রতারণা করে নিজের আখের গুছিয়েছেন ভূয়া হাফেজ লোকমান। বহুবছর যাবত কয়েকটি এতিমখানা, মাদ্রাসার রিসিভ বই বানিয়ে মানুষের সাথে করে আসছেন প্রতারণা। ২০১৯ সাল থেকে বরিশাল জেলায়, এর আগে খুলনা, ঢাকাসহ একাধিক জেলায় একই ভাবে প্রতারণা করে তার নিজ গ্রামে উঠিয়েছেন আলিশান বাড়ি। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করলেও নিজেকে হাফেজ লোকমান পরিচয়ে বরিশাল নগরীতে প্রতিনিয়ত মানুষকে ধোঁকা দিয়ে হাতাচ্ছেন টাকাপয়সা।
বছরের পর বছর ধরে ভূয়া হাফেজ লোকমান বরিশাল নগরীতে আস্তানা গড়ে করছেন এ সব প্রতারণা। এমন কর্মকাণ্ডের খোঁজ করতে গেলে বেড়িয়ে আসে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বলছিলাম মাদারিপুর জেলার রাজৈর উপজেলার শিবপুর নগর-গোয়ালন্দী গ্রামের লতিফ চকিদারের ছেলে লোকমান চৌকিদারের কথা। এই লোকমান চৌকিদার আগে দেশের বিভিন্ন জেলায় একই নিয়মে প্রতারণা করে হাতিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। তার নিজ গ্রামে গড়ছেন সম্পদের পাহাড়।
গোয়ালন্দী গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রহমান বলেন, লোকমান চকিদার ছোটবেলা থেকেই ভিন্ন ধরণের। লেখাপড়া তেমন একটা না করলেও বর্তমানে তার চালচলন দেখলে মনে হয় হাফেজ বা মাওলানা। অথচ তিনি এতিমখানা-মাদ্রাসার নামে টাকা-পয়সা উঠিয়ে সেই টাকায় গ্রামে নিজের জন্য করেছে চারতলা ভবন।
ভুয়া হাফেজ লোকমান ২০১৯ সাল থেকে বরিশাল নগরীতে আস্তানা গেড়ে একই পদ্ধতিতে হাতাচ্ছেন টাকা-পয়সা। নিজেকে হাফেজ লোকমান পরিচয় দিয়ে এতিমখানা-মাদ্রাসার নামে ভূয়া রশিদ বানিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষের সাথে করে যাচ্ছেন প্রতারণা। শুধু টাকাপয়সা নয়, মাদ্রাসা ছাত্রদের পোষাক, বইপুস্তক ও খাদ্য সামগ্রীর কথা বলেও মানুষের কাছ থেকে সকল ধরণের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে তার নিজ পরিবারের কাজে ব্যবহার করেন এই ভূয়া হাফেজ লোকমান। বর্তমানে নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ড স্টেডিয়াম কলোনীতে চাঁদমারী মসজিদের ইমাম দেলোয়ার হোসেনের বাসায় ভাড়া থাকেন তিনি ও তার পরিবার।
কলেজ অ্যাভিনিউ মসজিদের ইমাম মামুনুর রশিদ জানান, এভাবে মিথ্যা কথা বলে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে চাঁদা উঠিয়ে নিজে আত্মসাত করা মারাত্মক অপরাধ। এসব কারণে সত্যিকার অর্থে অভাবী কোন মাদ্রাসা-এতিমাখানা কর্তৃপক্ষ জনসাধারণের কাছে সহায়তা চাইলেও সবাই তাদের প্রতারক মনে করবে। এসব ব্যক্তি সমাজের জন্য ক্ষতিকর। এদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা উচিত।
ভূয়া হাফেজ লোকমান চৌকিদারকে অনুদান দেওয়ার কথা বলে এ সংবাদের প্রতিবেদক দেখা করেন। এ সময় প্রতারণার কারণ জিজ্ঞেস করলে লোকমান দৌঁড়ে পালিয়ে যান।