সিটি মেয়র সাদিকসহ তিন কর্মকর্তার কিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ

মেয়র সাদিকের হার-জিত! যে ৭টি অভিযোগ তার বিরুদ্ধে

বরিশাল অফিস থেকে এম. লোকমান হোসাঈন :: চুন খসতেই থানা ঘেরাও, সড়ক ও নৌপথের যানবাহন বন্ধ করে জনগণকে কষ্টে ফেলাসহ নানা অভিযোগের পাহাড় বরিশালের মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ সহ তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।

মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নারী কেলেঙ্কারী, চাঁদাবাজী মামলাসহ নানা অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক বা আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের পক্ষে অবস্থান নেওয়া। এমনকি ওই সকল অপরাধীদেরকে শাস্তি বা সর্তক না করে তাদের পক্ষে গিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করেন। বরিশাল সিটি মেয়র সাদিকের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব অভিযোগগুলোর মধ্যে:

১ম ঘটনা: পূর্বের অভিযোগ হচ্ছে, প্রয়ত সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণ এর অনুসারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হামলাসহ নানাভাবে হয়রানি করে কোনঠাসা করে রাখা। এমনকি বরিশাল ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে প্রয়াত সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণ অনুসারীদের। যারা বরিশালে অবস্থান করছেন তাদেরও রাখা হয়েছে কোনঠাসা করে।


আরো পড়ুন: বরিশালের ঘটনায় প্রশাসন ক্যাডারের কড়া বিবৃতি নিয়ে যা বললেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব
আরো পড়ুন:ফেসবুক গ্রুপ থেকে ৫ উপায়ে ইনকাম করুন


২য় ঘটনা: পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল সদর আসনের এমপি কর্ণেল জাহিদ ফারুক শামীমের অনুসারীদেরও নানাভাবে কোনঠাসা করে রাখারও অভিযোগ মেয়রের বিরুদ্ধে। যদিও কর্ণেল জাহিদ ফারুক শামীম বুঝেও না বুঝার ভান করে বিষয়টি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন। কারণ তিনি দ্বন্দ্ব থেকে এড়িয়ে চলাটাই বেশী পছন্দ করছেন।

৩য় ঘটনা: বরিশাল বিসিক শিল্প মালিক সংগঠনের সভাপতি এবং ফরচুন সু কোম্পানির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের সাথে মেয়র সাদিক ও তার অনুসারীদের দ্বন্দ্ব। বরিশাল বিসিক শিল্প মালিক সংগঠনের সভাপতি এবং ফরচুন সু কোম্পানির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের কাছে দাবীকৃত চাঁদা না পেয়ে নানাভাবে হয়রানির চেষ্টা করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় জানুয়ারী মাসের মাঝের দিকে তার কোম্পানির একজন নারী শ্রমিককে যৌন হয়রানি করেন ছাত্রদলের ক্যাডার সোহাগ।

সোহাগ বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর বিশ্বাস্ত কর্মী হিসেবে পরিচিত। এসময় স্থানীয় লোকজন ও বিসিকের অন্যান্য শ্রমিকরা পুলিশে ধরিয়ে দেন সোহাগকে নারী শ্রমিককে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে বিসিক এলাকার বাসীন্দা ছাত্রদলের এই সাবেক ক্যাডার সোহাগের মুক্তির দাবীতে নগরীর কাউনিয়া থানা ঘেরাও করেন মেয়র সাদিকের অনুসারীরা। পুলিশ সোহাগকে ছাড়তে অনিহা প্রকাশ করায়, এক পর্যায় বরিশাল থেকে ছুটে যাওয়া লঞ্চ, বাস বন্ধ করে দেন নেতাকর্মীরা।

পরবর্তীতে ক্যাডার সোহাগকে ছেড়ে উল্টো ফরচুন সু কোম্পানির মিজান সহ ৩ জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা দায়ের করতে বাধ্য করা হয় কাউনিয়া থানা পুলিশকে। এর পরেও মিজানকে দমাতে না পেরে বিসিক মালিকদের সংগঠনের সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালানোর পাশাপাশী মিজানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার জন্য নানা ষড়যন্ত্র করা হয়। বিসিক মালিকদের দাবী বিসিক মালিকদের নামে কতিপয় ব্যক্তিদের দায়ের করা কমিটির বেশীর ভাগ ব্যক্তিদের নেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ওই কমিটির অধিকাংশ লোকজন হচ্ছে বিএনপির ক্যাডার ও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী।

৪র্থ ঘটনা: ৭মার্চ সন্ধার দিকে নগরীর প্রাণকেন্দ্র বিবির পুকুরের উত্তর পাড়ে চালু করার ৭দিনের মাথায় ‘টপটেন মার্ট সুপার শপ’ নামক অভিজাত দোকানে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছে একদল সন্ত্রাসী। লুটপাটের ঘটনায় জড়িত ছিল প্রায় ৩০-৩৭ জন তরুণ ও কিশোর। এ সময় স্থানীয়রা ৫জনকে আটক করে পুলিশে দেন। যদিও বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসিমকে জড়ানোর চেষ্টা চালানো হয়। প

রবর্তিতে হামলার ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়ে পড়লে হামলা ও লুটপাটের নেপথ্যে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারীদের নাম চলে আসে। বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়লে নামমাত্র আইওয়াস করে ওসেখানেই ধামাচাপা দেওয়া হয়। সময়ের বার্তা’র কাছে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দেখা যায় লুটপাটের ঘটনায় জড়িত লোকজন জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিবের কর্মী। রাজিবের নির্দেশেই টপটেনে লুটপাট করা হয়েছে। এর মধ্যে যারা লুটপাটে অংশ নিয়েছেন তাদের পুরস্কার স্বরূপ বরিশাল সিটি করর্পোশনে চাকরী দিয়েছেন। রাজিব হচ্ছে মেয়রের আরেক বিশ্বস্ত কর্মী।

৫ম ঘটনা: অবৈধ অটো রিকসা থেকে বিট বাণিজ্য (চাঁদাবাজী) করায় ১৭ মে নগরীর ২৯ নং ওয়ার্ড ইছাকাঠীর বাসীন্দা রিপন নামে একজনকে চাঁদাবাজী মামলায় এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ গ্রেফতার করেন। মুহুর্তের মধ্যে থানা ঘেরাও করে পুলিশকে হুশিয়ারি দেন মেয়র সাদিকের অনুসারী মুনিম, সাজ্জাদ, বাবু, রইজ আহমেদ মান্না, সোহাগসহ প্রায় শ খানেক নেতাকর্মীরা।

৬ষ্ঠ ঘটনা: ২৭ মে বরিশাল নগীরর ২১নং ওয়ার্ডের মানু মিয়ার গলিতে ঘটনার দিন বিকালে জমি সংক্রন্ত জেড়ধরে বিলাস নামক এক ব্যক্তি ৯৯৯ এ কল করে অভিযোগ জানান। এরপর ঘটনাস্থলে যায় কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক আনোয়ার হোসেনসহ একাধিক পুলিশ সদস্যরা। ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাইয়েদ আহম্মেদ মান্না কর্তৃক হামলার শিকার হয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। এসময় বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক রেজাউল ইসলাম রেজার দাবী তারা ‘৯৯৯ এ কল পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। জমি সংক্রন্ত বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছিলেন তারা। এ সময় কাউন্সিলর শেখ সাইয়েদ আহম্মেদ মান্না এসে পুলিশকে তুই-তুকারি শুরু করে এক পর্যায় পুলিশ সদস্যদের মারধরের পাশাপাশী পুলিশের পোশাক খুলে নেওয়ার হুমকি দেন মান্না। যদিও এতো সব ঘটনার পরেও অদৃশ্য শক্তির কারণে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কারণ মান্না মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর ঘনিষ্ট এবং বিশ্বস্ত একজন কর্মী। এছাড়া নগরীতে বহু অভিযোগ সাদিক অনুসারীদের বিরুদ্ধে। ইতোপূর্বে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারীরা নানা অপর্কম চালালেও তিনি সরাসরি কোথায় অংশ না নিলেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পাশাপাশী স্যোসাল মিডিয়ার মাধ্যমে পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করে আসলেও বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসায় হামলার ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন মেয়র সাদিক।

৭ম ঘটনা: গত ১৮ আগস্ট রাতে ইউএনওর বাসায় হামলা ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ উঠে। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে এবং ইউএনও নিজে বাদী হয়ে মোট ২ টি।মেয়র সাদিকের হার-জিত! যে ৭টি অভিযোগ তার বিরুদ্ধে

Check Also

প্রধান বিচারপতির কাছে নাজির কামরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ

প্রধান বিচারপতির কাছে নাজির কামরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ

প্রধান বিচারপতির কাছে নাজির কামরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ।।  মিথ্যা মামলা দিয়ে অর্থ বাণিজ্যপ্রভাব খাটিয়ে রায়ের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *