শ্রেণিকক্ষের টিনের চালা উড়ে গেছে।
বরগুনার বেতাগী উপজেলার কাউনিয়া কলেজ কালবৈশাখীতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবারের ঝড়ে উড়ে গেছে নয়টি শ্রেণিকক্ষসহ ১১টি কক্ষের টিনের চালা। এ ছাড়া কলেজের টিনশেড ভবনের একপাশের দেয়াল পুরোপুরি ধসে গেছে। প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী নিয়ে বিপাকে পড়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ এপ্রিল। এখন এই প্রতিকূল পরিবেশে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস এবং পরীক্ষা কেন্দ্র প্রস্তুত করে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার মতো অন্য কোনো ব্যবস্থা নেই কলেজে।
উপজেলার বড়ামজুমদার ইউনিয়নের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত কাউনিয়া কলেজটি ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৯ সালে কলেজটি এমপিওভুক্ত হয়। কলেজটিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। কলেজটি জাতীয়করণ হলেও এখন পর্যন্ত অবকাঠামোর তেমন উন্নয়ন হয়নি। কালবৈশাখীর তাণ্ডবে কলেজটির ভবন লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
ঝড়ে ভবনের দেয়াল ধসে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা ঝড়ে ভবনের দেয়াল ধসে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বুধবার সরেজমিনে কাউনিয়া কলেজে দেখা যায়, কালবৈশাখীতে কাউনিয়া কলেজের মূল ভবনের ১১টি কক্ষের টিনের চালা উড়ে গেছে। টিনের চালার ওপর পড়ে আছে ফ্যান ও বৈদ্যুতিক বোর্ড। ঝড়ে মূল ভবনের দক্ষিণ পাশের দেয়াল সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চ এবং বিজ্ঞানাগারের আসবাবপত্র। এ ছাড়া নষ্ট হয়েছে কলেজের একটি কম্পিউটারসহ বেশ কিছু ইলেকট্রনিকস যন্ত্রপাতি।
ওই এলাকার ছাত্র অভিভাবক ইউনুস গাজী, মাসুদ আলম, সুশান্ত কুমারসহ অনেকে জানান, বৃহৎ এই এলাকার কলেজটি নির্মাণকালে স্থানীয়ভাবে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এলাকায় একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করায় এখানকার শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকবৃন্দ বেশ উপকৃত হয়েছে। হঠাৎ ঝড়ে যে ক্ষতি হয়েছে তাতে প্রতিষ্ঠানটির ঘুরে দাঁড়ানো প্রায় অসম্ভব।
কলেজ শাখার ইসলামী ইতিহাসের প্রভাষক এএসএম জহিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হঠাৎ কালবৈশাখীতে আমাদের কলেজটি লন্ডভন্ড হয়ে যায়। মূল্যবান কাগজ, আসবাবপত্র এবং ল্যাবের মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই অবস্থায় এখন কলেজে ক্লাস কিংবা অফিসিয়াল কাজ পরিচালনা করা সম্ভব নয়।’
টিনের চালার ওপর বৈদ্যুতিক ফ্যান পড়ে আছে। ছবি: আজকের পত্রিকাটিনের চালার ওপর বৈদ্যুতিক ফ্যান পড়ে আছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
কাউনিয়া কলেজের অধ্যক্ষ মো. হেমায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল সন্ধ্যার আগে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে মুহূর্তের মধ্যে কলেজের ১১টি কক্ষের টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে যায় এবং দেয়াল ভেঙে যায়। এ ছাড়া কলেজ প্রতিষ্ঠালগ্নের লম্বা টিনশেড ঘরের চালাও উড়ে যায়। ঝড়ে ক্লাসরুম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী নিয়ে আমরা এখন বিপাকে পড়েছি। আগামী বুধবার ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ শেষ হবে। ক্লাসরুম সংকটে এখন ক্লাস এবং পরীক্ষাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কোনো উপায় না পেলে শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচেই ক্লাস করতে হবে।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফারুক আহমেদ বলেন, ঝড়ের পরপরই সরেজমিনে গিয়ে কলেজটি পরিদর্শন করি। ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।