সাক্ষাৎকার নিয়েছেন – মো.হিমায়েত মোল্যা,
বিশেষ ফটো সাংবাদিক
দৈনিক বাংলার ধূমকেতুঃ স্যার,আপনি কোথায় জন্মগ্রহণ করেছেন?
মো. নাসির উদ্দিনঃ ১৯৮৭ সালের ৫ই জুলাই, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ থানাধীন সুবিদখালি গ্রামে জন্মগ্রহন করেছি। আমার পিতা মরহুম আফছের আলী আকন ও মাতা আমেনা বেগম।
দৈনিক বাংলার ধূমকেতুঃ স্যার,আপনি অত্যন্ত রোমান্টিক ও মিশুক একজন মানুষ।শৈশবে কোথায় বেড়ে ওঠেছেন?
মো.নাসির উদ্দিনঃ আমার সবচেয়ে মধুর স্মৃতিময় ঘটনা হলো শ্রীমন্ত নদীর তীরে বেড়ে ওঠা।এই অপরূপ নদীকে ঘিরে রয়েছে শৈশবের অনেক স্মৃতি।সারাদিন বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা,নদীতে নেমে সাতাঁর কাটা আবার কখনো গাছে ওঠে আম-জাম পেড়ে খেয়ে সন্ধ্যায় মায়ের আঁচলের নিচে এসে লুকানো ছিল আমার নিত্যদিনের অভ্যাস।
দৈনিক বাংলার ধূমকেতুঃ স্যার,আপনি কোথায় পড়াশোনা করেছেন?
মো.নাসির উদ্দিনঃ সুবিদখালী র.ই মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০২ সালে এসএসসি ও ২০০৪ সালে বরিশাল সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পূর্ণ করেছি।এরপর ২০০৫-০৬ সেশনে ভর্তি হয়েছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভাষাবিজ্ঞান বিভাগে। একই বিষয় থেকে সম্পন্ন করেছি স্নাতকোত্তর । বর্তমানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জিনাত ইমতিয়াজ স্যারের সরাসরি ছাত্র ছিলাম আমি।বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিক্ষক ড. রফিকুল ইসলামও আমার শিক্ষক ছিলেন।ঢাবির বর্তমানে ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড.আসাদুজ্জামান স্যারও আমার একজন প্রিয় শিক্ষক ছিলেন।
দৈনিক বাংলার ধূমকেতুঃ স্যার,আপনার প্রিয় শখ কী? আপনার লেখা কোনো বই কি প্রকাশিত হয়েছে? কোন কোন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত আছেন।
মো.নাসির উদ্দিনঃ ঘুরে বেড়াতে আমার খুব ভালো লাগে। নোয়াখালী ও কক্সবাজার ব্যতীত বাংলাদেশের সকল জেলায় ঘুরে বেড়িয়েছি। বিসিএস চাকরিপ্রত্যাশীদের জন্য রচিত আমার লেখা “ক্যারিয়ার প্লাস বাংলা ভাষা ও সাহিত্য” বইটি ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে। প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে “ক্যারিয়ার প্লাস বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি সহায়িকা; ক্যারিয়ার প্লাস বাংলা বিসিএস লিখিত এবং প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ সহায়িকা”। বিসিএস প্রত্যাশী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশের দু’টি শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “বিসিএস কনফিডেন্স” ও “ইউসিসি” তে দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষকতা পেশায় কর্মরত আছি।
দৈনিক বাংলার ধূমকেতুঃ স্যার,আপনার অতিবাহিত শিক্ষাজীবন ও বাংলাদেশকে নিয়ে আপনার কোনো স্বপ্ন থেকে থাকলে সে সম্পর্কে বলুন।
মো. নাসির উদ্দিনঃ আমার জীবনের সর্বোৎকৃষ্ট সময় কেটেছে ঢাবি’র স্যার. এএফ রহমান হলে।এখনো প্রতি সপ্তাহে শুক্রবারে ঢাবিতে ঘটে সকল বন্ধু-বান্ধবের এক সুখময় মিলনমেলা। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত ঘরের সন্তানেরা বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে কোচিং করতে আসে।আমি তাঁদের সাথে বন্ধুর মতো মিশি আর বাচ্চাদের মতো পড়া ধরিয়ে দেই;অর্থনৈতিক সমস্যা আমার সাথে শেয়ার করতে পারে অনায়াসেই।আমি আমার সাধ্যমতো তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। আমি বাংলা ব্যাকরণ ও সাহিত্য অংশের ক্লাস নেই।ছাত্র -ছাত্রীরা বাংলা ব্যাকরণ ও সাহিত্য অংশে কিছুটা দুর্বল থাকে, আমি তাদের সহজ করে বিভিন্ন টেকনিকের মাধ্যমে পড়ানোর চেষ্টা করি।
দৈনিক বাংলার ধূমকেতুঃ স্যার,বাংলাদেশের প্রচলিত শিক্ষা-ব্যবস্থা নিয়ে কিছু বলুন।
মো. নাসির উদ্দিনঃ প্রথমেই বাংলাদেশে ত্রিমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তে একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা উচিত,এতে যেকোনো ছাত্র যেকোনো বিষয়ে পারদর্শী হবে। চীন,রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় কেউ বেকার থাকে না;সেখানে বাস্তবমুখী শিক্ষার উপর খুব জোর দেওয়া হয় এবং চাকুরি প্রার্থীরা যোগ্যতানুযায়ী চাকুরি পায়।নিবন্ধন পরীক্ষা বাদ দিয়ে পিএসসির আদলে আলাদা বোর্ড গঠন করা উচিত।ডাক্তারদের হাসপাতালে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা উচিত,এতে তাঁরা বিসিএস পুলিশ বা প্রশাসন ক্যাডারের দিকে ঝুঁকবে না।
দৈনিক বাংলার ধূমকেতুঃ স্যার,বিসিএস প্রত্যাশী বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে আপনার পরামর্শ কী?
মো. নাসির উদ্দিনঃ একজন বিসিএস ক্যাডার প্রত্যাশীকে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাতে তিনটি ধাপ অতিক্রম করতে হয়।তাই স্নাতক প্রথম বর্ষ থেকেই দৈনিক কমপক্ষে ২ঘন্টা করে বিসিএসের জন্য পড়া উচিত। ইংরেজি ও গণিতের উপর বেশি জোর দেওয়া উচিত।কারণ ইংরেজি ও গণিতে ভালো নম্বর না থাকলে আপনি ভালো চয়েসফুল ক্যাডার পাবেন না।