বাংলা চলচ্চিত্রের এক মমতাময়ী চরিত্র নায়িকা শাবানা। অসংখ্য মনমুগ্ধকর ছবি উপহার দিয়ে যিনি দর্শকদের হৃদয়ের মণিকোঠায় জায়গা করে নিয়েছিলেন। চিত্রজগতে তুমুল সফলতার তুঙ্গে থাকা অবস্থায় ১৯৯৭ সালে হঠাৎ তিনি অভিনয় ছেড়ে ধর্মচর্চায় মন দেন।
অনেকেই এখনো জানেন না কেন শাবানা অভিনয় ছেড়ে দিয়েছিলেন। আবার অনেকেই ভেবেছেন আগের মত ছবি হিট হচ্ছে না শাবানার। অথবা বয়স বেশি হয়ে যাওয়ায় কোন পরিচালক আর তাকে সিনেমায় নিচ্ছিলেন না। এই ধরনের ভাবা আসলেই বেশ স্বাভাবিক। তবে জানেন কি এর একটি কারণেও সিনেমা ছাড়েননি শাবানা। তাহলে কেন সিনেমা ছেড়েছেন তিনি?
এক জীবনে শাবানা যত নাম, যশ, খ্যাতি, প্রতিপত্তি অর্জন করেছেন, সবটুকুই তার অভিনয় আর চলচ্চিত্রের কারণে। তবে হঠাৎ কেন তিনি নিজেকে এইভাবে আড়াল করে ফেললেন? এতদিন পরে এসে শাবানার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে সেই উত্তর। শাবানা নাকি কেবল অভিনয়ই ছাড়েননি, রীতিমত ‘তওবা’ করেছিলেন।
জানা যায়, ১৯৯৭ সালে তার যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মেয়ে সুমী ইকবালকে কিছুতেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন তিনি মনে মনে নিয়ত করেন, যদি মেয়েকে ফিরে পান তাহলে জীবনে আর কখনো অভিনয় করবেন না। বরং সিনেমা জগৎকেই তিনি ছেড়ে দিয়ে ধর্মচর্চায় মন দিবেন। অবশেষে মেয়েকে ফিরে পেয়ে তিনি অভিনয়, চলচ্চিত্র ছাড়েন, ছাড়েন দেশও। স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন আমেরিকায়।
শাবানার বড় মেয়ে সুমী ইকবাল এখন পড়াশোনা শেষ করেছেন। বিয়ে করে এখন সে সম্পূর্ণ একজন গৃহিণী। ছোট মেয়ে ঊর্মি সাদিক হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন। ছেলে নাহিন সাদিক রটগার্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করে চাকরি করছেন।
আফরোজা সুলতানা রত্না, শাবানা নামেই অধিক জনপ্রিয়। ১৯৬২ সালে শিশুশিল্পী হিসেবে “নতুন সুর” চলচ্চিত্র দিয়ে তার চলচ্চিত্রে আবির্ভাব ঘটে। পরে ১৯৬৭ সালে ‘চকোরী’ চলচ্চিত্রে চিত্রনায়ক নাদিমের বিপরীতে প্রধান নারী চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনি ৩৬ বছর কর্মজীবনে ২৯৯ টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ষাট থেকে নব্বই দশকে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ছিলেন এই অভিনেত্রী।