দেশে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিল ভারত

বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে ভারত। বাংলাদেশের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতেও ১৪ হাজার ৪০০ টন পেঁয়াজ রপ্তানি করার অনুমতি দিয়েছে মোদী সরকার।

সোমবার (৪ মার্চ) এক বিজ্ঞপ্তিতে ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যবিষয়ক মহাপরিচালকের দপ্তর (ডিজিএফটি) এই তথ্য জানিয়েছে। শনিবার (২ মার্চ) বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম বলেছিলেন, এই সপ্তাহেই ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আসবে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, বন্ধুপ্রতীম কিছু দেশে নির্দিষ্ট পরিমাণ পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। এসব দেশের অনুরোধের ভিত্তিতেই অনুমতি দিয়েছে নয়াদিল্লি। আর এই রপ্তানি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ন্যাশনাল কো-অপারেটিভ এক্সপোর্ট লিমিটেডের (এনসিইএল) মাধ্যমে।

এনসিইএল ভারতের একটি আন্তঃরাজ্য সমবায় প্রতিষ্ঠান। এর মধ্য়ে গুজরাট কো-অপারেটিভ মিল্ক মার্কেটিং ফেডারেশন, ইন্ডিয়ান ফার্মার্স ফার্টিলাইজার কো-অপারেটিভ লিমিটেড, কৃষক ভারতী কো-অপারেটিভ লিমিটেডসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান এই সমবায়ের আওতায় রয়েছে।

এর আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে সীমিত পরিমাণে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেয় ভারত। বাংলাদেশের সঙ্গে সঙ্গে শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, বাহরাইন ও মরিশাসেও পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেয় বিজেপি সরকার। তবে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নেওয়ার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি নয়াদিল্লি।

এর আগে, পবিত্র রমজান মাসে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমাতে নির্দিষ্ট পরিমাণে চিনি ও পেঁয়াজের অনুমতি দিতে ভারতকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। ১৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু সাংবাদিকদের জানান, রোজার আগেই ভারত থেকে দেড় লাখ টন চিনি ও পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। এর মধ্যে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ ও ১ লাখ মেট্রিক টন চিনি।

বিশ্ব বাজারের দ্বিতীয় বৃহত্তম পেঁয়াজ রপ্তানিকারক ভারত। গত বছরের ডিসেম্বরে স্থানীয় বাজার স্থিতিশীল রাখতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটির সরকার। জাতীয় নির্বাচনের আগে ভারতের বাজারে ক্রমবর্ধমান মূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ ও পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে দ্বিতীয় দফায় আগামী মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ায় দেশটি।

রপ্তানি নিরুৎসাহিত করতে দেশটির সরকার প্রথমে পেঁয়াজের ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। তারপরও আশানুরূপ ফল না পাওয়ায় পেঁয়াজের রপ্তানি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে ভারত। সেসময় ভারত সরকার বলে, পেঁয়াজ রপ্তানির এই নিষেধাজ্ঞা ওই বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। দেশটির সরকার গত বছরের অক্টোবরে ভোক্তাদের স্বস্তি দিতে খুচরা বাজারে ভর্তুকি দিয়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২৫ রুপিতে বিক্রির লক্ষ্যে মজুত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে ভারতের সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। ওই বছরের ২৮ অক্টোবর দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার প্রতি টন পেঁয়াজের সর্বনিম্ন মূল্য ৮০০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে দেয়। সেই সময় নতুন এই মূল্যসীমা ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে জানানো হয়।

Check Also

রাফায় ইসরায়েলি হামলায় একই পরিবারের ৯ জনের মৃত্যু

ফিলিস্তিনের রাফায় ইসরাইলি হামলায় একই পরিবারের ৯ সদস্য নিহত হয়েছেন। তবে বেঁচে গেছে ওই পরিবারের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *