রাজধানীতে ভোরে কোনো যাত্রী বাস বা লঞ্চ থেকে নেমে রিকশাযোগে গন্তব্যে রওনা হলেই তারা টার্গেট করত। এরপর মাইক্রোবাস নিয়ে তার পিছু পিছু গিয়ে সুযোগ বুঝে সেই রিকশাকে থামাতো। তারা নিজেদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বলে পরিচয় দিত। তাদের এমন পরিচয় পেয়ে লোকজন ভড়কে যেতেন। এই সুযোগে তারা সবকিছু জোর করে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যেত।
এভাবে একটি চক্র রাজধানীর কারওয়ান বাজার, সায়েদাবাদ, গাবতলী, গুলিস্তান, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালসহ আন্তঃজেলা বাস ও লঞ্চে করে ঢাকায় আসা যাত্রীদের টার্গেট করে দীর্ঘদিন ধরে ছিনতাই ও ডাকাতি করে আসছিল। কেউ তাদের কাজে বাধা দিলে আঘাত করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নিত। অবশেষে সেই চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- ডাকাত দলের সরদার নাহিদ হোসেন ওরফে আনন্দ ও তার সহযোগী মো. বাবুল (৬৩), মো. দেলোয়ার ওরফে রিপন (৩৮), মো. মনতাজুল (৪০), মো. রতন ইসলাম (৩৮। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি করে নেওয়া টাকা ও ব্যবহৃত দুটি রিকশা উদ্ধার করা হয়।
সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের চক্রটির ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানান।
সম্প্রতি দক্ষিণের জেলা বরগুনা থেকে আসা তিনজনের রিকশা থামিয়ে এমন কাণ্ড ঘটায় চক্রটি। তারা অভিযোগ করার পর সেই চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করে ডিবির ওয়ারী বিভাগের একটি টিম।
হারুন বলেন, গত ৪ মার্চ ভোরে বরগুনা থেকে বাসে করে কবির হোসেনসহ তিনজন ঢাকায় আসেন। তারা সৌদি আরবে যাওয়ার কথা ছিল। এজন্য পুরান পল্টনের একটি এজেন্সির কাছে (ফিটনেস) মেডিকেল করার কাগজ জমা দিতে আসেন। সেদিন ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বাস থেকে নেমে তিনজন মিলে যাত্রাবাড়ী সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে থেকে রিকশায় পল্টনের দিকে আসছিলেন। কিছু দূর আসার পর ওয়ারীর শশী মোহন বসাক লেন এলাকায় পুলিশ পরিচয়ে কয়েকজন তাদের রিকশার গতিরোধ করেন। এসময় তারা ভুক্তভোগী কবিরের কাছে থাকা প্রায় ৩৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। এই ঘটনায় কবির বাদী হয়ে ওয়ারী থানায় একটি মামলা করেন।
ডিবি প্রধান বলেন, চক্রটি রিকশায় ঘুরে ঘুরে ডাকাতি করত। গ্রেফতার ডাকাত দলের সরদার নাহিদের বিরুদ্ধে তিনটি ছিনতাই, একটি মাদকসহ পাঁচটি, বাবুলের বিরুদ্ধে পাঁচটি ছিনতাই, দুটি দ্রুতবিচার আইন ও তিনটি মাদক মামলাসহ ১০টি এবং দেলোয়ারের বিরুদ্ধে দুটি ছিনতাই মামলা রয়েছে।