ইউক্রেন সংক্রান্ত সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার পরাজয় নিশ্চিত করতে ইউক্রেনকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। ইউক্রেন অবশ্য প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পশ্চিমা সহায়তার অভাব সম্পর্কে অভিযোগ করছে।
রাশিয়ার হামলার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের জয় নিশ্চিত করতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ ইউরোপের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সহায়তার সম্ভাবনাই উড়িয়ে দিতে প্রস্তুত নন। এমনকি প্রয়োজনে সেনাবাহিনী পাঠানোর কথাও বলেছেন তিনি।
সোমবার প্যারিসে ইউক্রেন সংক্রান্ত ইউরোপীয় সম্মেলনে উপস্থিত ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর মাক্রোঁ রাশিয়ার আরও কড়া অবস্থানের উল্লেখ করেন। তার মতে, এমন অবস্থায় ইউরোপের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে রাশিয়ার পরাজয় অপরিহার্য। শুধু ইউক্রেন নীতির কারণে নয়, সার্বিকভাবে রাশিয়ার আগ্রাসী মনোভাব বেড়ে চলেছে বলে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মন্তব্য করেন।
রাশিয়ার হামলা মোকাবিলা করতে ইউক্রেনের সহায়তা সম্পর্কে ইউরোপে নীতিগত ঐকমত্য থাকলেও খুঁটিনাটি বিষয়গুলোর প্রশ্নে মতপার্থক্য রয়েছে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের ঠিক পরেই জার্মানি ইউক্রেনকে সবচেয়ে বেশি সামরিক সহায়তা দিলেও সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে নারাজ। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস সম্প্রতি ইউক্রেনকে টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর বিষয়ে নিজের দ্বিধার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। জার্মান অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালালে জার্মানিও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
মাক্রোঁ স্বীকার করে বলেন, ইউরোপীয় সেনাবাহিনী পাঠানোর ক্ষেত্রে এখনো কোনো ঐকমত্য নেই। তবে ‘কৌশলগত অস্পষ্টতা’-র স্বার্থে তিনি কোনো সম্ভাবনাই উড়িয়ে দিতে প্রস্তুত নন। স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো মনে করিয়ে দেন, যে দুই বছর আগে রাশিয়ার হামলার শুরু হওয়ার পরেও অনেকে ইউক্রেনকে ট্যাংক বা যুদ্ধবিমান দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, বিনয়ের সঙ্গে স্বীকার করা উচিত যে অবশেষে ছয় থেকে বারো মাস দেরিতে সেই সহায়তা পাঠানো হয়েছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ প্যারিস সম্মেলনের পর বলেন, আপাতত ইউক্রেনের কমে আসা গোলাবারুদ ও অস্ত্রসশস্ত্রের প্রেক্ষাপটে অবিলম্বে আরও সামরিক সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আরও বেশি ও দ্রুত মাঝারি ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং বোমা সরবরাহ করে ইউক্রেনকে সাহায্য করতে চায় ইউরোপ।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কি ভিডিও লিংকের মাধ্যমে প্যারিস সম্মেলনে যোগ দেন। সংক্ষিপ্ত বার্তায় তিনি সমবেতভাবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।