একেএম মহিউদ্দিন :: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, দেশের যুব সমাজকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে সরকারি ও নানা উদ্যোগের কোন বিকল্প নেই। দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজকে আলোকিত করতে এই যুব সমাজের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে যুব সমাজের অংশগ্রহণ কখনো কখনো আমাদেরকে উদ্বিগ্ন করে।
কারণ আমরা সমাজের কল্যাণকর কাজের পাশাপাশি আমরা দেখতে পাই যুবসমাজ নানা ধরণের ঘৃণ্য অপকর্মের সাথে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় যুবসমাজ নেশায় আসক্ত হয়ে পরিবার সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্য বোঝা হয়ে তৈরি হচ্ছে। এটি আমাদের জন্য কখনোই কাম্য নয়, কাম্য ছিলও না।
আরো পড়ুন: একজন অসাধারণ সমাজসেবক নাহিদা সুলতানা
আরো পড়ুন: সন্তান প্রসবের পর দীর্ঘদিন মাসিক বন্ধ থাকলে যা করণীয়
১২ আগস্ট ২০২১ বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে ‘যুব উন্নয়ন সংসদ’ ঢাকার উদ্যোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক লাইভ ও জুম প্লাটফর্মে “কর্মসংস্থান ও মূল্যবোধের ঘাটতিই যুব সমাজের উন্নয়নে বড় চ্যালেঞ্জ” শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের সাবেক ডিন ও মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান এর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের প্রফেসর ড. যোবায়ের মুহাম্মদ ইহসানুল হক।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন দেশের বরেণ্য সাংবাদিক ও দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ আখতার হোসেন মজুমদার, বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের সেক্রেটারি জেনারেল ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ড. মুহাম্মদ আবু ইউছুফ খান , বিশিষ্ট শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আতিয়ার রহমান, বিশিষ্ট আইনজীবী ও যুব উন্নয়ন সংসদের কার্যকরী কমিটির সভাপতি এডভোকেট ড. মোঃ হেলাল উদ্দিন, বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও নর্দান মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, ডিসিসিআই নির্বাহী সচিব মো. জয়নাল আবেদিন প্রমুখ বিশিষ্ট নাগরিকগণ। সেমিনারে সঞ্চালনা করেন যুব উন্নয়ন সংসদ ঢাকার চিফ কো-অর্ডিনেটর মুহাম্মদ কামাল হোসাইন।
প্রধান অতিথি মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, আমাদের দক্ষ জনবল টেকসই জনবল লাকসই প্রযুক্তি এবং অবক্ষয়হীন ব্যক্তির ঘাটতি দেখা যাচ্ছে বলেই বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশর ১৮ থেকে ৩৫ বছরের ব্যক্তি জনশক্তিকে মূলবোধ্যের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে আমরা ব্যর্থ হলে জাতিকে চরম পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হবে। জরুরি ভাবে এখনই সমাজে সচেতনতার পাশাপাশি দক্ষ জনবল তৈরীর জন্য কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বাস্তবিক ভাবে আজকের শিক্ষা ব্যবস্থা জ্ঞানহীন হয়ে যাচ্ছে। এ শিক্ষায় দক্ষ মেধাবী জনবল তৈরীতে বিরাট অন্তরায়। প্রত্যেক ছাত্রের জন্য প্যাকটিক্যাল নলেজ টা হচ্ছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের পূর্ব পুরুষেরা শিক্ষকেরা পথ দেখিয়ে গিয়েছিলেন বলেই আজ আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি। জাতি জীবনে পচন ধরার আগেই ব্যবস্থা নিতে হবে। নতুবা ভয়ংকর পরিণতি আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। একটা জাতির সম্পদ হচ্ছে যুব সমাজ সেই শ্রেণীকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে হবে।
আরো পড়ুন: শিশু মাদকাসক্ত হওয়ার পেছনে দায়ী পরিবার: মো: রাকিব হাওলাদার
আরো পড়ুন: নারী সমাজ: প্রেক্ষাপট বাংলাদেশর
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান বলেন, মূলত যুব সমাজ একটি জাতির মূল শক্তি। সমাজ ও রাষ্ট্রকে বিশ^ দরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে অবশ্যই নৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ হতে হবে এই যুব সমাজকে। বাংলাদেশে ধর্মীয় মূল্যবোধের ভিত্তিতে এদেশের মানুষের মধ্যে প্রকৃত পক্ষে আত্মমর্যাদাবোধ রয়েছে। সেই মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে আমাদের যুব সমাজকে দক্ষ জনবল হিসেবে প্রস্তুত করতে হবে।
প্রশিক্ষনের মাধ্যমে সরকারি ভাবে বা অন্যভাবে কাজের নিশ্চয়তা বিধান করতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানাই। এ বিষয়ে সরকারকে পলিসি তৈরী করতে হবে, রাষ্ট্রীয় ভাবে প্রত্যেকেটা উপজেলায় যুব কর্মক্ষেত্র মূলক ট্রেনিং সেন্টার তৈরী করতে হবে। সুতরাং যুবকদের অর্জিত মেধা-দক্ষতাকে যেন দেশের কল্যাণে কাজে লাগাতে পারে, সেই ধরণের সুযোগ বা ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। পরিশেষে একটা কথা বলতে চাই, আমাদের দেশে যেকোনো বিষয়ে ব্যক্তির দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কোন কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণের বিকল্প নেই।