একজনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি, বাকি দুই জন ৮ম ও ৫ম শ্রেণি। শিক্ষাগত যোগ্যতা কম থাকলেও তারা তৈরি করতেন বিভিন্ন নামি-দামি ব্র্যান্ডের মোবাইলফোন। বিভিন্নভাবে নিম্নমানের যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করে তারা বিভিন্ন ব্রান্ডের মোবাইলফোনের মতো হুবহু নকল ফোন তৈরি করে আসছিল। এসব নকল ফোন রাজধানীর দুটি মার্কেটসহ দেশের বিভিন্ন মোবাইল মার্কেটে অর্ধেক দামে বিক্রি হয়ে আসছে। তাদের তৈরি নকল ফোন দেখতে এতটাই নিখুঁত যে ক্রেতার কাছে কোনোভাবে বোঝার উপায় নেই যে তার হাতের ফোনটি নকল।
রাজধানীর কলাবাগানা থানায় করা একটি মামলায় এসব নকল ফোন তৈরি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ। শনিবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর কলাবাগানের ইস্টার্ন প্লাজায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন-মো. আল-আমিন হোসেন (২৪), মো. শিমুল (১৯) ও মো. রাসেল (৩১)। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল তৈরির যন্ত্রাংশসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৩১৭টি নকল মোবাইলফোন জব্দ করা হয়।
সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, চক্রটির সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে ভিভো, অপো, আইফোন, রেডমি, রিয়েলমি স্মার্টফোন ও নোকিয়া বাটন ফোনের মাদারবোর্ড ও বিভিন্ন নিম্নমানের যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করে এসব নামি-দামি ব্রান্ডের নকল ফোন তৈরি করে আসছে। এরপর তারা আইএমইআই স্টিকার ও মোবাইলের বক্সসহ অন্যান্য সামগ্রী তৈরি করে এসব রাজধানীর মোতালেব প্লাজা ও নাহার প্লাজারসহ ঢাকার বাইরের বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে কুরিয়ার করে বিক্রি করতো।
পরে ব্যবসায়ীরা এসব মোবাইল সেকেন্ডহ্যান্ড বলে নির্ধারিত মূল্যের অর্ধেক দামে বিক্রি করতো সাধারণ ক্রেতাদের কাছে। তাদের এ নকল মোবাইল দেখতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের অরজিনাল মোবাইল ফোনের মতো হুবহু দেখতে। এমনকি অরিজিনাল ফোনের অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয় এসব নকল মোবাইলে।
ডিবি প্রধান আরও বলেন, চক্রটি কলাবাগানের ইস্টার্ন প্লাজার সপ্তম তলায় এ নকল মোবাইল তৈরি করতো। যদিও তারা খুব বেশি লেখাপড়া জানে না, কিন্তু বিভিন্ন নামি-দামি ব্র্যান্ডের হুবহু নকল মোবাইল তৈরি করে আসছিল।
নকল মোবাইল তৈরির যন্ত্রাংশ তারা বিভিন্ন উপায়ে সংগ্রহ করতো। প্রথমত তারা বিভিন্ন চোরাই মোবাইলের যন্ত্রাংশ কিনতো এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে নিম্নমানের যন্ত্রাংশ কিনে এনে এসব নকল মোবাইল তৈরি করতো। তাদের কাছে আরও যেসব যন্ত্রাংশ ছিল সেগুলো দিয়ে তারা প্রায় হাজার খানেক নকল মোবাইলফোন তৈরি করতে পারতো বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ।