চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানোর দাবি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’ দাবি করে গভীর উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে সুচিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ পাঠানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।

সোমবার (১ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মানবিক বিবেচনায় বেগম খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ চিকিৎসার জন্য দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ও বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানিয়েছেন।

তারা বলেন, অতীতের প্রতিহিংসা ও ভুল স্মরণে না রেখে সরকারকে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা দরকার। দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রবীণ রাজনীতিক বেগম খালেদা জিয়ার জীবন সুরক্ষার জন্য জরুরি ভিত্তিতে উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। তার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতকরণে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে। মনে রাখতে হবে, তার কিছু হয়ে গেলে পরে সবাইকে আক্ষেপ করতে হবে।

নেতৃদ্বয় বলেন, যতদূর জানা গেছে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। কারাবন্দি হওয়ার আগে থেকেই তার বেশ কিছু অসুখ ছিল। কারাবন্দি থাকায় সেগুলো মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এরই মধ্যে তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। চিকিৎসার জন্য বারবার হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। সবমিলিয়ে বেগম জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা বেশ উদ্বেগজনক। এই অবস্থায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং একজন বীর উত্তমের স্ত্রী হিসেবে তার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।

তারা আরও বলেন, দেশের একজন সিনিয়র নাগরিক, রাজনীতিক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসায় সরকারের উচিত দ্রুত সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা। মানবিক কারণেই তার সুচিকিৎসার সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সরকারেরই কল্যাণ হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অসুস্থতাকে যেভাবে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হয়েছিল, খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রেও সরকারকে একই রকম উদ্যোগ নেওয়া উচিত। তার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে অতি দ্রুত বিদেশে নেওয়ার দায়িত্বও সরকারের।

নেতৃদ্বয় বলেন, সরকার যদি খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি না দেয়, আর আল্লাহ না করুন, তার যদি কিছু হয়ে যায়, তাহলে সরকারকেই সকল দায় গ্রহণ করতে হবে। তাই সরকারের উচিত তাকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেওয়া। তার বিদেশ যাওয়ার সকল বাধা অপসারণের দায়িত্ব সরকারের। তাকে তার পছন্দের বিদেশের হাসপাতালে চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন বলে দেশবাসী বিশ্বাস করতে চায়।

তারা বলেন, সুচিকিৎসা পাওয়া একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। বেগম খালেদা জিয়া দেশের একজন সিনিয়র সিটিজেন। সংবিধানে তাকে বেঁচে থাকার জন্য চিকিৎসা গ্রহণের অধিকার নিশ্চিত করেছে। স্মরণ করা প্রয়োজন যে, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তৎকালীন জাসদের সাধারণ সম্পাদক আ স ম আবদুর রবকে চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।

একইভাবে ১৩ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমকে ওয়ান-ইলেভেনের সরকার ২০০৮ সালে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে। এ রকম দৃষ্টান্ত আরও আছে। তাই মানবিক বিচেনায় সরকারের উচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আইনের দোহাই দিয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না করা।

Check Also

আ.লীগ সরকার গণতন্ত্রকে নিরুদ্দেশ করে দিয়েছে: আমিনুল

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রকে নিরুদ্দেশ করে দিয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *