ইরানের ইসফাহান শহরে গত শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েল। এই হামলার পর লক্ষ্যস্থল ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে নানা রকমের অনুমান শুরু হয়। কিন্তু সেগুলো প্রতিহতের দাবি করেছিল ইরান। কিন্তু ওই হামলায় একটি বিমানঘাঁটিতে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি স্যাটেলাইটের প্রকাশিত কিছু দৃশ্যে দেখা গেছে। খবর বিবিসি।
রোববার (২১ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় এসব দৃশ্য ধারণ করা হয়।
দুটি দৃশ্য বিশ্লেষণ করেছে বিবিসি ভেরিফাই। তাতে দেখা যায়, হামলায় ইসফাহানের ওই বিমানঘাঁটির একটি প্রতিরক্ষাব্যবস্থার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় ইসফাহান শহরের কাছে একটি পারমাণবিক স্থাপনার সুরক্ষায় নিয়োজিত রাডারব্যবস্থা লক্ষ্য করে ইসরায়েল ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় বলে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি নিশ্চিত করেনি ইসরায়েল।
মার্কিন ওই কর্মকর্তা এবিসি নিউজকে বলেন, শুক্রবার ভোরে ইরান সীমান্তের বাইরে থেকে ইসরায়েলি জঙ্গি বিমান তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করে ইরানের কর্মকর্তাদের বরাতে নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়, বিমানঘাঁটিতে ওই হামলা ছাড়াও ইসফাহানের প্রায় ৫০০ মাইল উত্তরে তাবরিজ এলাকা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
তবে এই হামলা প্রতিহত করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
হামলায় ঠিক কোন ধরনের অস্ত্র বা অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট না হলেও স্যাটেলাইটে ধারণ করা দৃশ্যে ওই বিমানঘাঁটিতে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়েছে।
অবশ্য হামলার পর এখনো ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনা থেকে কোনো ছবি পাওয়া যায়নি। আর জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) বলেছে, ‘ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কোনো ক্ষতি হয়নি।’
উল্লেখ্য, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালায় ইসরায়েল। হামলায় ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাসহ ১১ জন নিহত হন। ওই হামলার জবাবে গত ১৩ এপ্রিল শনিবার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি)।
এ হামলার প্রতিশোধ নিতে ইরানে পাল্টা হামলার কথা বলেছিল ইসরায়েল। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো পাল্টা হামলা না চালাতে অনুরোধ করেছিল ইসরায়েলকে। এর মধ্যেই দেশটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল।
এদিকে ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালালে তার কঠিন জবাব দেওয়া হবে বলে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে ইরান। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি সম্প্রতি সেনা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক কুচকাওয়াজে বলেছেন, আমাদের মাটিতে ইহুদিবাদী শাসকদের (ইসরায়েল) যেকোনো আক্রমণের কঠোর জবাব দেওয়া হবে।