ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১৪

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে শনিবার (২০ এপ্রিল) এক হামলায় ১৪ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। বসতিস্থাপনকারী ইহুদিদের পৃথক হামলা থেকে আহতদের উদ্ধার করতে গিয়ে একজন অ্যাম্বুলেন্স চালক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।

রোববার (২১ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ভোররাতে ফিলিস্তিনি শহর তুলকার্ম শহরের কাছে নুর শামস এলাকায় একটি অভিযান চালায়। এই অভিযানে শনিবার (২০ এপ্রিল) পর্যন্ত সশস্ত্র যোদ্ধাদের সঙ্গে গোলাগুলি হয়।

রয়টার্স জানায়, ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় সংঘটিত যুদ্ধে ঘরবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়ে পড়া ফিলিস্তিনিরা নুর শামস এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিল, তাদের বংশধররাও এখন এলাকাটিতে বসবাস করছে।

এখানে ইসরায়েলের সামরিক যানগুলো জড়ো হওয়ার পরপরই ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। এসময় নুর শামস এলাকায় অন্তত তিনটি ড্রোন উড়তে দেখা যায়।

বিভিন্ন ফিলিস্তিনি উপদলীয় বাহিনী নিয়ে গঠিত তুলকার্ম ব্রিগেডস জানিয়েছে, শনিবার তাদের যোদ্ধারা ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে গুলি বিনিময় করেছে।

১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় ইসরায়েলি বাহিনী ১০০ কিলোমিটার লম্বা ও ৫০ কিলোমিটার প্রশস্ত কিডনি আকৃতির এলাকা পশ্চিম তীর দখল করে নেয়। তারপর থেকে এলাকাটি ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সংঘাতের কেন্দ্র হয়ে আছে।

গাজা যুদ্ধের ডামাডোলে অঞ্চলটিতে ধারাবাহিকভাবে চলা সহিংসতার খবর তেমন একটা সামনে আসছে না। অথচ সেখানে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে, ইহুদি বসতিস্থাপনকারীরা ফিলিস্তিনি গ্রামগুলোতে তাণ্ডব চালাচ্ছে আর ফিলিস্তিনিরাও রাস্তায় ইসরায়েলিদের ওপর সুযোগমতো পাল্টা হামলা চালাচ্ছে।

গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নিয়মিত অভিযানে পশ্চিম তীরে কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি গ্রেফতার ও কয়েকশ নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের পাশাপাশি পাথর ছোড়া তরুণরা ও নিরীহ বেসামরিকরাও রয়েছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান চলাকালে অন্তত ১৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে মাত্র দুইজনকে বন্দুকধারী হিসেবে শনাক্ত করেছেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা। নিহত অন্যান্যদের মধ্যে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর রয়েছে। শুক্রবার আরেক জন নিহত হয়েছিল।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, অভিযান চলাকালে বেশ কয়েকজন বন্দুকধারী নিহত ও বহু গ্রেফতার হয়েছে। এসময় গোলাগুলিতে চার ইসরায়েলি সেনা আহত হয়েছে।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পৃথক আরেক ঘটনায় নাবলুস শহরের দক্ষিণে আল-সাবিয়া গ্রামের কাছে ইসরায়েলিদের গুলিতে ৫০ বছর বয়সী এক অ্যাম্বুলেন্স চালক নিহত হয়। ইহুদি বসতিস্থাপনকারীরা ওই গ্রামটিতে হামলা চালালে অনেকে আহত হয়। এই অ্যাম্বুলেন্স চালক আহতদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার সময় ইসরায়েলিরা তাকে গুলি করে হত্যা করে।

বসতিস্থাপনকারীরা তাকে গুলি করেছে কি না, তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হয়নি। এ বিষয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীও কিছু জানায়নি।

Check Also

রাফায় ইসরায়েলি হামলায় একই পরিবারের ৯ জনের মৃত্যু

ফিলিস্তিনের রাফায় ইসরাইলি হামলায় একই পরিবারের ৯ সদস্য নিহত হয়েছেন। তবে বেঁচে গেছে ওই পরিবারের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *