বিষ ও ভেজালমুক্ত ইফতারি এবং খাদ্য নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে কয়েকটি পরিবেশবাদী সংগঠন। মানববন্ধন থেকে কার্যকর বিষ ও ভেজালমুক্ত ইফতারি এবং খাদ্য নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণণের দাবি জানিয়েছে তারা।
শনিবার (৯ মার্চ) দুপুরে জাতীয় জাদুঘরের সামনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ), বাংলাদেশ নিরাপদ পানি আন্দোলন (বানিপা), গ্রিন ফোর্স, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগ, বারসিক ও ঢাকা যুব ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে এবং পবা’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ ওয়াহেদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পবা’র কার্যকরী সভাপতি জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, নাসফের সাধারণ সম্পাদক ও পবা’র সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী, পবার সম্পাদক ও বাংলাদেশ নিরাপদ পানি আন্দোলনের সভাপতি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, বারসিকের সমন্বয়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, নগরবাসী সংগঠনের সভাপতি হাজি শেখ আনসার আলী প্রমুখ।
এসময় ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, প্রতি বছর রাজধানীসহ সারাদেশে প্রচুর ইফতারজাতীয় খাবার বিক্রি হয়। এ সুযোগেই মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত লাভের আশায় ইফতারিতে ভেজাল মেশান। খাদ্যে ভেজাল একটি নীরব ঘাতক, এতে দেশের অধিকাংশ মানুষ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ইফতারিসহ সব খাদ্য বিষ ও ভেজালমুক্ত করতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট সবার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, অনিরাপদ খাদ্য বা ভেজাল খাদ্যে সংক্রান্ত আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ না হওয়ার কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা খাদ্যে ভেজাল মিশিয়েয পার পেয়ে যাচ্ছেন। নিরাপদ ইফতারের জন্য প্রথম এবং প্রধান হলো পানযোগ্য পানি। কিন্তু বাজারে যার দাম অনেক বেশি। রমজানে পানযোগ্য সুপেয় পানি পাবলিক প্লেসগুলোতে সহনীয় মূল্যে পরিবেশন/বিতরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন বলেন, সুস্বাস্থ্যের জন্য চাই স্বাস্থ্যসম্মত নিরাপদ খাদ্য। বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের বিকল্প কিছু নেই। আমরা খাদ্যের সাথে রোজ বিষও খাচ্ছি।
নগরবাসী সংগঠনের সভাপতি শেখ আনসার আলী বলেন, রমজান মাসে রোজাদাররা তাজা শাকসবজি, মৌসুমি ফলমূল, মাছ-মাংসসহ অন্য দ্রব্যাদির পরিপূর্ণ নির্ভেজাল স্বাদ গ্রহণ করতে চান। কিন্তু বর্তমান বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি খাদ্য ও পণ্যদ্রব্যই ভেজালমিশ্রিত। খাবারে ভেজাল মেশানো আমাদের দেশে ব্যবসায়ীদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
অন্য বক্তারা বলেন, ভেজাল খাবার জনস্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত করার পাশাপাশি সার্বিক অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। ভেজাল খাবার গ্রহণ করে মানুষ যেসব মারাত্মক অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে তার চিকিৎসা ব্যয় অত্যধিক এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দীর্ঘস্থায়ী চিকিৎসা লাগে বা আজীবন চিকিৎসা করতে হয়। এতে জনগণের আয়ের একটি বড় অংশ চলে যায় অনাকাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা ব্যয়ে।
এসময় মানববন্ধনে আয়োজক সংগঠনের নেতাসহ পরিবেশ ও স্বাস্থ্য অধিকার কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।