রাজধানীর শাহবাগে জামদানি মেলা শুরু হয়েছে। জামদানি শিল্পীদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রয়ে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এবং বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের যৌথ উদ্যোগে এ মেলা আয়োজিত হচ্ছে।
শনিবার ৩০ মার্চ থেকে ০৩ এপ্রিল পর্যন্ত ৫ দিনব্যাপী জাতীয় জাদুঘরে নলিনীকান্ত ভট্টশালী আর্ট গ্যালারিতে জামদানি মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান রোববার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সচিব খলিল আহমদ এবং জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান। এতে সভাপতিত্ব করেন বিসিক চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার ভৌমিক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, জামদানিকে আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত করা হবে। সেজন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে যথাক্রমে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান, আন্তর্জাতিক মানের প্যাকেজিং তৈরি, রপ্তানি বাণিজ্যে প্রণোদনা প্রদান, বিদেশের বাংলাদেশ মিশনগুলোতে শোকেসিং ইত্যাদি।
তিনি আরও বলেন, উন্নত বুনন কৌশল, বাহারি নকশা ও অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে জামদানি অতুলনীয়। তাছাড়া এটি অত্যন্ত আরামদায়ক। একসময় বাংলার মসলিন বিশ্ববিখ্যাত ছিল। এখন সময় এসেছে মসলিনের বিকল্প হিসেবে জামদানিকে সারাবিশ্বে সমাদৃত করার। বিদেশিদের নিকটও এটি অত্যন্ত পছন্দনীয়। আন্তর্জাতিকভাবে জামদানিকে আরও গ্রহণযোগ্য ও সমাদৃত করতে হলে এ শিল্পে শিশুশ্রম বন্ধ করতে হবে। যেকোনো শিল্পে উৎপাদন খরচ না উঠলে সে শিল্প বিকশিত হতে পারে না। তিনি এ বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি দিতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান।
সংস্কৃতি সচিব খলিল আহমদ বলেন, ইউনেস্কো সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় আরও বেশি সংখ্যক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অন্তর্ভুক্তির জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল শাড়িকেও এ তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে মন্ত্রণালয় বদ্ধপরিকর।
সভাপতির বক্তব্যে বিসিক চেয়ারম্যান বলেন, ঐতিহ্যবাহী পণ্য জামদানির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বিসিক বহু আগে থেকেই কাজ করে যাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামে ১৯৯৩ সালে বিসিকের তত্ত্বাবধানে ২০ একর জমির ওপর জামদানি শিল্প নগরী গড়ে তোলা হয়। এছাড়াও বাংলাদেশের প্রথম ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য জামদানির স্বীকৃতি সনদ ২০১৬ সালে প্রাপ্ত হয় বিসিক। বিসিক ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের যৌথ উদ্যোগে ‘জামদানি মেলা-২০২৪’ এর সফল আয়োজন বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী জামদানির প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।