প্রধান বিচারপতির কাছে নাজির কামরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ
প্রধান বিচারপতির কাছে নাজির কামরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ

প্রধান বিচারপতির কাছে নাজির কামরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ

প্রধান বিচারপতির কাছে নাজির কামরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ।।  মিথ্যা মামলা দিয়ে অর্থ বাণিজ্যপ্রভাব খাটিয়ে রায়ের কপি আটকে রাখা ।। স্টাফ রিপোর্টার ॥ বরিশাল চীফ মেট্রোপলিটন আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ কামরুল হাসান আসামী কর্তৃক নগদ ৫ লাখ টাকা নেয়াসহ মামলা নিষ্পত্তি করতে ২৫ লাখ টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এমন অভিযোগ এনে চলমান বছরের ২৮ আগষ্ট প্রধান বিচারপতি বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন বরিশালের স্থানীয় দৈনিক আজকের সময়ের বার্তা পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক এম. লোকমান হোসাঈন।

তিনি লিখিত আবেদনের অনুলিপি প্রেরণ করেছেন সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্টার জেনারেল, হাইকোর্ট বিভাগের বিচার শাখা রেজিস্টার, আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার একান্ত সচিব, আইন ও বিচার বিভাগের একান্ত সচিব, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালত, বরিশাল চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও বরিশাল জেলা আইনজীবি সমিতি সভাপতি/সম্পাদক বরাবর।

উপবৃত্তির জন্য আবেদন পত্র লেখার নিয়ম লিংক সহ (নমুনা পত্র)

বরিশাল চীফ মেট্রোপলিটন আদালতের নাজির কামরুল ইসলাম বর্তমানে একই আদালতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) পদে দায়িত্ব পালন করছেন। লোকমান হোসাঈন এর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে, বরিশাল জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বরিশাল জেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মইদুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করি। মইদুল ইসলাম বাদী হয়ে নাজির কামরুল ইসলামের যোগসাজসে বরিশাল চীফ মেট্রোপলিটন আদালতে আমিসহ আমার পত্রিকার ৩ জন সহকর্মীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলা নং-২৩/০১৯।

পরবর্তীতে আদালতের নাজির কামরুল ইসলাম রহ্যসজনক কারণে মামলাটি গোপন করে ফেলেন। ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারী মামলা দায়েরের পর ১৩ মার্চ মামলা নম্বর ঠিক রেখে নথি পরিবর্তন করে আরো কিছু ধারা যুক্ত করে মামলাটি নতুন করে দায়ের করেন তিনি।

এরপর দৈনিক আজকের সময়ের বার্তা পত্রিকায় ‘চেয়ারম্যান মইদুলকে বাচাঁতে বিচারক কবিরের জালিয়াতি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে আমিসহ আমার অফিসের ৬ সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন বরিশাল চীপ মেট্টোপলিটন আদালতের নাজির কামরুল ইসলাম। অন্যদিকে, একই সংবাদের জের ধরে মইদুল ইসলামও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ একাধিক মামলা করেন।

মামলার বিষয়বস্তু ছিল- প্রকাশিত ওই সংবাদে বিচারক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এর অনুমতি ছাড়া মিথ্যা সংবাদ ও ছবি প্রকাশ করা সংক্রান্ত অভিযোগ। পরে নাজির কামরুল এক পর্যায় মামলা নিষ্পত্তি করার জন্য নিজ থেকে যোগাযোগ করে ২৫ লাখ টাকা দাবী করেন। আর এ টাকা না দিলে আরো মামলা দিয়ে জেল খাটানোর হুমকি দেয় নাজির কামরুল।

কোডিং শেখার গুরুত্ব ও সম্ভাবনা of learning coding

এমন পরিস্থিতিতে দায়ের করা মামলাগুলোতে সময়ের বার্তা পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মোঃ ফরহাদ হোসেন ফুয়াদ প্রায় ২ মাস, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোঃ রিয়াজ চৌধুরী দেড় মাস, এছাড়া বাকি সদস্যরা বিভিন্ন মেয়াদে জেলহাজতে ছিলেন। পরে উচ্চ আদালত থেকে এই মর্মে জামিন পাই, সংবাদটি বাংলাদেশ সংবিধান মেনে প্রকাশিত হয়েছে।

তাই ২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সাইবার ট্রাইব্যুনাল (বাংলাদেশ) ঢাকার বিজ্ঞ বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন সকল আসমীদের অব্যহতি প্রদান করেন। এ মামলা থেকে অব্যহতি পেলে নাজির কামরুল ক্ষিপ্ত হয়ে ২০২০ সালের ২৭ আগষ্ট তারিখ আমার (লোকমান) বিরুদ্ধে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা আ.লীগ সমর্থক মো: সোহেল মাসুদকে বাদী বানিয়ে আমাকে একটি ভুয়া ওয়েবসাইটের মালিক সাজিয়ে উক্ত ওয়েবসাইটে একটি সংবাদ পোস্ট করে আমার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৩১/২১।

এ মামলায় জামিন চাইতে গেলে নাজির কামরুল অর্থ দাবী করে বলেন, টাকা না দিলে এই মামলায়ও জেল-হাজতে যেতে হবে এবং সাজা হবে বলে জানান দেয়। ১৫ দিন জেলহাজতে থাকার পর জামিনে বের হলে ফের টাকা দাবী করেন। তবে আদালত কোনোভাবেই প্রামাণ করতে পারেননি আমি অপরাধী বা এই ওয়েবসাইট এর মালিক আমি।

তার পরও রহস্যজনকভাবে রায় দেয়ার কারণে ওই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে শরণাপন্ন হয়েছি। যা চলমান রয়েছে। এ মামলায় এমন অবস্থার পর নাজির কামরুল ওই মইদুল ইসলাম কর্তৃক দায়ের করা অপর মামলাগুলো দিয়ে হয়রানি করতে মেতে উঠেন নাজির কামরুল। মামলাগুলোতে নিয়মিত হাজিরা দিতে গেলে, নাজির কামরুল অর্থ দাবী করে বলেন, বরিশালের সকল কোর্ট তার হাতের মুঠোয়। টাকা না দিলে আরো মামলা হবে।

প্রধান বিচারপতির কাছে নাজির কামরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ

এমন পরিস্থিতিতে আমার শিশু-বাচ্চার কথা ও পরিবারের কথা চিন্তা করে জেলহাজত ও হয়রানি থেকে বাঁচতে নাজির কামরুলকে প্রাথমিকভাবে ৫ লাখ টাকা দেই। পরবর্তীতে কামরুল দাবিকৃত বাকি টাকা নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছে। নাজির কামরুল যে সংবাদের উপর ভিত্তি করে মামলা করেছেন, একই সংবাদের ভিত্তিতে মামলা করেছিল মইদুল ইসলাম।

মামলাটি হাইকোর্ট এ কোয়াশমেন্ট এর জন্য আবেদন করলে আদালত মামলাটি “স্টে” বা স্থগিত করে রেখেছেন। এতে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে নাজির কামরুল আমার (লোকমান) বিরুদ্ধে গোপনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরিশাল অফিসের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ এর মাধ্যমে আরো একটি মামলা দায়ের করে।

আবার গোপনে ওয়ারেন্ট বের করে মাত্র ৫২ মিনিট এর মধ্যে বাড়ি থেকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে থানা থেকে আদলতে পাঠালে আইনের ধারা অনুযায়ী বিচারক জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। কারাগারে গিয়ে জানতে পারে তার বিরুদ্ধে দুদক মামলা রয়েছে। মামলার বিষয় হল- বরিশাল সদর ভুমি সহকারী অফিসের নাজির রুহুল আমিন এর বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে ঘুষ গ্রহণ এর অভিযোগে বরিশাল বিজ্ঞ সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে দায়ের করা মামলা।

বাস্তবে ঘুষ গ্রহণ এর অভিযোগের বিষয়টি সঠিক। কিন্তু তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল বরিশাল মহানগর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ, জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. তালুকদার মো: ইউনুস ও সাবেক মেয়র সাদিকের মামা কাজী মফিজুল ইসলাম কামালসহ একাধিক নেতাদের চাপে পরে মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছিলাম। কিন্তু দুদক আসামীকে অব্যহতি দিয়ে উল্টো বাদীকে আমাকে আসামী করে মামলা করেছেন। যা বিচারধীন আছেন।

মইদুল ইসলাম এর দায়েরকৃত চাঁদাবাজি মামলা২০২৩ সালে ১৯ অক্টেবর বরিশাল বিজ্ঞ যুগ্ম জজ অতিরিক্ত আদালতের বিচারক সকল আসামীদের বেকসুর খালাস প্রদান করেছেন। তথ্য প্রমাণ রাখতে আইনের নিয়মে রায়ের নকল কপি উঠাতে আবেদন করা হলেও এখন পর্যন্ত পাইনি।

সর্বশেষ ২০২৪ সালের ১১ আগষ্ট আদালতের মামলার হাজিরা দিতে গেলে আমিসহ সময়ের বার্তা পত্রিকার নিবার্হী সম্পাদক মোঃ ফরহাদ হোসেন ফুয়াদ, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোঃ রিয়াজ চৌধুরী ও চীফ ফটো সাংবাদিক লিটন হোসেন এর সামনে নাজির কামরুল বলেন, দাবিকৃত টাকা চেয়ে উষ্কানী দেয়।

প্রধান বিচারপতির কাছে নাজির কামরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ

জানা গেছে, তথ্য অধিকার আইনে বরিশাল জেলা পরিষদ থেকে ডাকযোগে পাওয়া তথ্যের ভিক্তিতে সংবাদ প্রকাশ করায় মইদুল ইসলাম মামলা দায়েরের পর নানাভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে। পরে ‘চেয়ারম্যান মইদুলকে বাঁচাতে বিচারক কবিরের জালিয়াতি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পরই পর্যায়ক্রমে ওই সকল ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। আবেদনকারী লোকমান হোসাঈন বলেন, প্রধান বিচারপতি বরাবর তিনি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

আর ঘটনার বর্ণনা সবই সত্য। বিষয়টি জানতে চাইলে অভিযুক্ত কামরুল হাসানের মুঠোফোন নম্বর (০১৭………৬৬৭) পাওয়া যায়। বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাড. গোলাম কবির বাদল বলেন, এখন পর্যন্ত এমন কোন তথ্য হাতে এসে পৌঁছেনি, পেলে জানাবো। না দেখে কিছুই বলা যাবে না। বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. খান মো. মোর্শেদ বলেন, কয়েকদিন ঢাকায় অবস্থান করেছিলাম।

তাই না জেনে কিছু বলতে পারবো না। অভিযোগের বিষয় হাতে পেলে দেখে অবশ্যই বলা যাবে। নাজির কামরুলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগপত্র হাতে পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত বরিশাল এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা পরিমল মজুমদার।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহীদদের তালিকা সংগ্রহ চলছে-২০২৪

যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন। এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে

Check Also

গৌরনদী টেক্সটাইল‘র অধ্যক্ষ হুমায়ুনের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শিক্ষার্থীদের রক্তচুষে কোটিপতি অধ্যক্ষ হুমায়ুন!

গৌরনদী টেক্সটাইল‘র অধ্যক্ষ হুমায়ুনের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

গৌরনদী টেক্সটাইল‘র অধ্যক্ষ হুমায়ুনের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ।। স্টাফ রিপোর্টার ॥ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার শহীদ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *